নারায়ণগঞ্জের বন্দরে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা
হয়েছে। নিহত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা বেগম বাদী হয়ে ৮
জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার
অভিযোগে পুলিশ আরও দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। এই নিয়ে হত্যা মামলায় পুলিশ
তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- বন্দর উপজেলার আদমপুর
জিওধারা এলাকার মৃত জামানের ছেলে তুষার, মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মিছির
আলী(৫৩) ও মো: মিনা((৬০)।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জিওধারা
বাজার থেকে তাঁর স্বামী ইলিয়াস হোসেন তাদের ভাড়া বাড়িতে যাওয়ার পথে
আসামীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো চাকু দিয়ে
এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে(ভিক্টোরিয়া) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা
তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে তুষারসহ ৮ জনের নাম
উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সোমবার দুপুরে ইলিয়াসের লাশ বাড়িতে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশের অবতারনা
হয় ।ইলিয়াসের ছোট ভাই, খালা ও জেঠি বিলাপ করে ইলিয়াস হত্যার বিচার দাবি
জানান।তারা জানান, ১৫ দিন আগে তারা ইলিয়াসকে মারধর করেছে।এ নিযে থানায়
সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল।
সোমবার আছরের পর ইলিয়াসের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার শেষে বিক্ষুব্দ
জনতা তুষার গংয়ের শে আওয়ামীলীগ নেতা মাকসুদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে।তিনি
তুষার গংয়ের শেল্টারদাতা বলে এলাকাবাসী জানান।
কেন এই হত্যাকান্ড?
এ ব্যাপারে জিওধরা গ্রামের বাসিন্দা সেকেন্দার আলী বলেন,
হত্যাকারী তুষারের বাবা জামান মিয়া মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।তার মৃত্যুর পর
বর্তমানের তার মা মাদক ব্যবসা করে। তুষার নিজে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে
এলাকায় মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। সে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে
এলাকাবাসীকে হয়রানী এবং চাদাবাজি করত।ইলিয়াস এ নিয়ে প্রতিবেদন করায় তাকে
হত্যা করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, এক সপ্তাহ আগে জিওধরা এলাকার জনৈক লতিফ মিয়ার বাড়িতে
অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয় তুষার সিন্ডিকেট্।ইলিয়াস এ নিয়ে পত্রিকায় খবর
প্রকাশ করেন।খবর প্রকাশের জের ধরে তুষার ও সাঙ্গোপাঙ্গোরা ইলিয়াসকে মারধর
করে।এ ব্যাপারে তিনি মদনগঞ্জ ফাড়ি পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরী করেন।
এ বিষয়ে মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজগর
হোসেন যুগান্তরকে বলেন, এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় জড়িত
থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি
তুষার অবৈধ গ্যাসের সংযোগ দিতো। এ ব্যাপারে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের সাথে
তাঁর শত্রুতা তৈরী হয়। মাদক সংক্রান্ত বিষয়ও থাকতে পারে। আমরা বিষয়টি
তদন্ত করছি। তবে তুষার পুলিশের সোর্স ছিল কিনা তা জানা নেই।
রোববার রাতে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে মাদক ব্যবসায়ীরা
। এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই পুলিশ ধারালো চাকুসহ অভিযুক্ত তুষারকে গ্রেফতার
করে।