৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ শনিবার | রাত ১১:১৩ মিনিট
ঋতু : গ্রীষ্মকাল | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম :
যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নতুনধারার গণস্বাক্ষর ও উঠান বৈঠক অবশেষে জানা গেল কলকাতার কোথায় আছেন ওবায়দুল কাদের মোনাজাতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চেয়ে কাঁদলেন লাখো মানুষ মদনপুরে ছাত্র-  হত্যাকারী ওহিদের বাড়িতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের মিলন মেলা ?  নিখোঁজের ৫ দিন পর সিরাজুল ইসলাম নামের ব্যক্তির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার  বিএনপির আড়ালে সক্রিয় আওয়ামী লীগ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা! বেইমানি করেছে সবাই, আল্লাহর সাহায্য চাইছে গাজাবাসী গাজায় গণহত্যা সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ মার্চে আসা রেমিট্যান্সে ভাঙল সব রেকর্ড গাজাবাসীর সমর্থনে হরতালের ডাক সারজিসের ড. ইউনূস ও বিমসটেক- সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তি বাংলাদেশ ভারত মহাসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র……………. এমপি ঘোষণার দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন হিরো আলম প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান তারেক রহমান র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬ মহাসড়কে অটোরিকশা উঠলেই ব্যবস্থা : জিএমপি কমিশনার গত একসপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৭০ শিশু নিহত… স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শ্রদ্ধা রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিসৌধে………… গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একাত্তরের চেতনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে : নাহিদ চট্টগ্রামে শিশু বলাৎকার, শিক্ষক আটক-এন সিটি নিউজ২৪.কম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ…..

ncitynews24.com
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | আপডেট: সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। সেখানকার নিভৃত পল্লীতেই শৈশব কৈশোর কেটেছে ক্রমে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠা শেখ হাসিনার। গ্রামের সহজ জীবন ও নির্মল প্রকৃতির সঙ্গে বেড়ে ওঠা শেখ হাসিনা এখন প্রভাবশালী বিশ্বনেতাদের একজন। পিতার স্বপ্নের স্বাধীন দেশ গড়ার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে চলছেন তিনি। একই সঙ্গে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন রেকর্ড সময় ধরে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে নিজের জন্মদিনের কোনো আনুষ্ঠানিকতায় সায় দেননি প্রধানমন্ত্রী।

এজন্য দলীয়ভাবে মিলাদ মাহফিল ছাড়া বড় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। একইভাবে সারা দেশেও একই ধরনের কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত সংখ্যক নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বাদ জোহর এবং দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। সকাল ৯টায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার (মেরুল বাড্ডা), সকাল ১০টায় খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস চার্চ (২৯ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০), সকাল ৬টায় তেজগাঁও জকমালা রাণীর গীর্জা এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। একইদিনে ঢাকাসহ সারা দেশে সকল সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, বিশেষ প্রার্থনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ সকল কর্মসূচি যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালন করবে।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। পুরনো ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন। পরে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত হলে আবাস স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ধানমণ্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন ১৯৬১ সালের ১লা অক্টোবর। এ সময় শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। একই বছর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬ দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। শুরু হয় প্রচণ্ড দমন-নির্যাতন-নিপীড়ন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তার জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা, অনিশ্চয়তা ও অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলোতেই, কারাবন্দি পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ই নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় বাঙালি জাতির ১১ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে যখন পাকহানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যায় তখন বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন একটি বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭শে জুলাই গৃহবন্দি থাকাবস্থায় শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি মুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ৯ই ডিসেম্বর তার কন্যা সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল জন্ম লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এ সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ই ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশ-মাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সামরিক জান্তা, স্বৈরশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চলে একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলুম, অত্যাচার কোনো কিছুই তাকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে চালানো হয় নারকীয় গ্রেনেড হামলা। এ হামলায় গুরুতরভাবে আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই নিজ বাসভবন সুধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাকে বন্দি করে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একের পর এক ষড়ন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা।
২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০১৪ সালের ৬ই জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। টানা তৃতীয় মেয়াদে চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা।
শিল্প সংস্কৃতি ও সাহিত্য অন্তঃপ্রাণ শেখ হাসিনা লেখালেখিও করেন। তার লেখা এবং সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩০টিরও বেশি। প্রকাশিত অন্যতম বইগুলো হচ্ছে- শেখ মুজিব আমার পিতা, সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আমাদের ছোট রাসেল সোনা, আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বিপন্ন গণতন্ত্র, সহেনা মানবতার অবমাননা, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, সবুজ মাঠ পেরিয়ে ইত্যাদি।