বন্দরে হিন্দু থেকে সদ্য মুসলমান হওয়া যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত সুমন চন্দ্র দাস ওরফে যুবায়ের ইসলামের(২২) বাবা নারায়ণ চন্দ্র দাস শনিবার রাতে বন্দর থানায় মামলাটি করেন । মামলায় সুমনের স্ত্রী ফিদা ইসলাম, শামীম, রায়হান, রাকিব ও সবুজসহ আরো ২/৩ জনকে আসামী করা হয়। পুলিশ ফিদা ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। সুমন শুক্রবার রাতে বন্দর রেল লাইন এলাকার ভাড়া বাসায় মারা যান। প্রতিবেশীরা সুমনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এলাকাবাসী জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার নন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে বন্দরের আমিন আবাসিক এলাকার ২নং গলির নারায়ণ চন্দ্র দাসের ছেলে সুমন চন্দ্র দাস দেড় মাস আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে হিন্দু থেকে মুসলমান হন। এক সপ্তাহ আগে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার নাজিমউদ্দিনের মেয়ে ফিদা ইসলামের সঙ্গে ফেইসবুকের মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। তিন দিন আগে ফেইসবুক বন্ধু ফিদা ইসলামকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে আসেন সুমন চন্দ্র দাস ওরফে যুবায়ের ইসলাম। এ সময় সুমনের বাবা নারায়ণ চন্দ্র দাস ছেলেকে ভর্ৎসনা করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর সুমন ফিদা ইসলামকে নিয়ে বন্দর রেল লাইন এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার এসআই ফয়েজ হোসেন এসআই ফয়েজ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে সুমনের বাবার কাছে জানতে পারি ছেলেটাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর আমি ঘটনা¯’লে যাই। এলাকাবাসী আমাকে জানান, সুমন আত্মহত্যা করেছে বলে ফিদা ইসলাম প্রতিবেশীদের জানান। পরে সুমনের ঝুলন্ত দেহ নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান ¯’ানীয় এলাকাবাসী। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন সুমনের শরীরে ছোট ছোট আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে। হাতে ব্লেডের কাটা দাগ এবং গলায় হালকা দাগ পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সুমনের স্ত্রী ফিদা ইসলাম জানান, সুমন আমাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। কিš‘ তার বাবা মা আমাকে ও সুমনকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার পর সুমন বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এরপর তিনি ঘুমের টেবলেট খেতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার অনেকগুলো ঘুমের টেবলেট খান এবং ব্লেড দিয়ে নিজের হাত নিজেই কাটেন। শুক্রবারও ঘুমের টেবলেট খান। রাতে গলায় হিজাব পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অব¯’ায় দেখে আমি প্রতিবেশীদের জানাই। তাদের সহায়তায় সুমনকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
সুমনের বাবা নারায়ণ চন্দ্র জানান, শুক্রবার রাতে এলাকার কিছু লোক তার ছেলে সুমনের লাশ বাড়িতে এনে দিয়ে যায়। তারা জানায় সুমন স্ট্রোক করে মারা গেছে। তিনি বলেন , সুমন স্ট্রোক করে মারা যায়নি । তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি ফখরুদ্দিন ভুইয়া বলেন, সুমনের কয়েকজন বন্ধু শুক্রবার রাতে লাশ বাড়িতে দিয়ে আসে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে লাশ পোষ্ট মর্টেমের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে সুমনের বাবা নারায়ণচন্দ্র বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ফিদা ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে।