৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ শনিবার | রাত ১১:১২ মিনিট
ঋতু : গ্রীষ্মকাল | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম :
যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নতুনধারার গণস্বাক্ষর ও উঠান বৈঠক অবশেষে জানা গেল কলকাতার কোথায় আছেন ওবায়দুল কাদের মোনাজাতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চেয়ে কাঁদলেন লাখো মানুষ মদনপুরে ছাত্র-  হত্যাকারী ওহিদের বাড়িতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের মিলন মেলা ?  নিখোঁজের ৫ দিন পর সিরাজুল ইসলাম নামের ব্যক্তির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার  বিএনপির আড়ালে সক্রিয় আওয়ামী লীগ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা! বেইমানি করেছে সবাই, আল্লাহর সাহায্য চাইছে গাজাবাসী গাজায় গণহত্যা সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ মার্চে আসা রেমিট্যান্সে ভাঙল সব রেকর্ড গাজাবাসীর সমর্থনে হরতালের ডাক সারজিসের ড. ইউনূস ও বিমসটেক- সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তি বাংলাদেশ ভারত মহাসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র……………. এমপি ঘোষণার দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন হিরো আলম প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান তারেক রহমান র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬ মহাসড়কে অটোরিকশা উঠলেই ব্যবস্থা : জিএমপি কমিশনার গত একসপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৭০ শিশু নিহত… স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শ্রদ্ধা রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিসৌধে………… গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একাত্তরের চেতনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে : নাহিদ চট্টগ্রামে শিশু বলাৎকার, শিক্ষক আটক-এন সিটি নিউজ২৪.কম

বন্দরে অবাধে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক সিরাপ। প্রশাসন নিরব….

ncitynews24.com
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | আপডেট: রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বন্দর উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাট বাজারে মুদি দোকান কনফেকশনারী চায়ের দোকান সহ বিশেষ করে ঔষধের দোকানে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক অবৈধ যৌন উত্তেজক বিভিন্ন ধরনের বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন ফ্রুট সিরাপ এর অজুহাত দিয়ে যৌন উত্তেজক পানীয় এই ধরনের বিভিন্ন ব্রান্ডের নামে ফ্রুট সিরাপ অবাধে বিক্রি হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, যৌন উত্তেজক সিরাপটি দৈহিক মিলনে স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করলেও পরবর্তীতে শরীরের স্বাভাবিক যৌন ক্ষমতা হ্রাস করে থাকে। অপর দিকে এই সিরাপটির নেই কোনো ঔষধ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ও বৈধতা, তার পরও এই ক্ষতিকারক সিরাপটি অবাধে স্বল্পমূল্যে সংগ্রহ, প্রস্তুতকরণ, সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, উঠতি বয়সী তরুণ ও যুবকরা তাদের বিকৃত মানসিকতার আনন্দ উপভোগ করার জন্য মাত্র ৩০-৪০টাকার বিনিময়ে সেবন করে থাকে।
কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সিরাপটি অধিক পরিমাণে সেবনের ফলে স্মৃতিশক্তি, যৌন ক্ষমতা ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসসহ শরীরের নানাবিধ রোগের দেখা দেয়। এতে করে একদিকে যেমন যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছে অপরদিকে এই অবৈধ ঔষধ প্রস্তুতকারীর মালিকরা কালো টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। সেই সাথে এদের থেকে  পণ্য নেওয়া ডিলাররাও ব্যাপক ভাবে অসাধু উপায়ে অর্থ কামিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এরইমধ্যে বন্দরে বেশ কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ীর নাম পাওয়া গেছে যাদের মধ্যে বন্দর ইউনিয়নের মিলন, কলাগাছিয়া জহির অন্যতম। এছাড়াও মুসাপুর, ধামগড়, মদনপুরে একাধিক ব্যক্তি এই অসাধু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
তাই সচেতন অভিভাবক ও জনসাধারণ ঐ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য বন্দর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সু-দৃষ্টি ও কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩ এর অধীনে ‘নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে বলা আছে যে, (খাদ্যদ্রব্য জব্দকরণ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ পদ্ধতি) খাদ্য দ্রব্যে বিষাক্ত উপাদান (ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম, সাইক্লামেট, ডিডিটি, পিসিবি ইত্যাদি), তেজষ্ক্রিয় ও ভারী ধাতুর ব্যবহার, ভেজাল খাদ্য বা খাদ্যোপকরণ উৎপাদন, আমদানি, বিপণন, নিন্মমানের খাদ্য উৎপাদন, অনুমোদন বিহীন, খাদ্য সংযোজন দ্রব্য বা প্রক্রিয়াকরণ সহায়ক দ্রব্যেও ব্যবহার, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য আমদানি, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয়, অনুমোদিত মাত্রার বাইরে বৃদ্ধি প্রবর্ধক, কীটনাশক, বালাইনাশক বা ঔষধের অবশিষ্টাংশ, অনুজীব ইত্যাদির ব্যবহার, অনুমোদন বিহীন বংশগতি বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনকৃত খাদ্য, জৈব খাদ্য, অভিনব খাদ্য ইত্যাদির উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

অপরপক্ষে ক্যাফেইন ব্যবহারের মাত্রা বিএসটিআই নির্ধারিত লিটারপ্রতি ১৪৫ মিলিগ্রাম করার কথা থাকলেও এর পুরোটাই আইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। বেশিরভাগ কোমল পানীয়ে ক্যাফেইনের উচ্চমাত্রা যেমন ব্ল্যাক হর্সে পাওয়া গেছে ৩৫২.৬৮ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন মানব শরীরের জন্য যেমন দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির কারণ অন্যদিকে এসব কোমল পানীয়ে ক্যাফেইনের উচ্চমাত্রার কারণে অনেকেই নেশা হিসেবে এগুলো খাচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার আইনে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে যে একজন ক্রেতা বা ভোক্তা কি গ্রহণ করছে সে ব্যাপারে শত ভাগ জানার অধিকার তার আছে। কিন্তু এনার্জি ড্রিংক’স গ্রহণের ক্ষেত্রে এর ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন স্পিডে মিশ্রিত উপাদানের ব্যাপারে বোতলের গায়ে যথাযথভাবে উল্লেখ থাকেনা। থাকেনা কোন সতর্কবার্তাও । যেমনটি থাকে সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে। যদিও সেটা মানব শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ভোক্তা অধিকারে আরো উল্লেখ আছে জেনে শুনে কেউ বিষ পান করলেও কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন দায়বদ্ধ থাকেনা। কিন্তু কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের নির্দিষ্ট দ্রব্যে ক্ষতিকর কোন কিছু ব্যবহার করার পর পণ্যের গায়ে এগুলো উল্লেখ না করাটা আইনত অপরাধ। আবার অনেক কোম্পানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা ভুয়া লেবেল লাগিয়ে উৎপাদন করছে এসব কোমল পানীয়। যেগুলোতে রয়েছে অতিউচ্চমাত্রার ক্যাফেইন ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ। বিএসটিআইয়ের ভুয়া লেবেল লাগিয়ে বাজারে বিক্রি হওয়া ২৭টি ব্র্যান্ডের এনার্জি ড্রিংকসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাসায়নিক পরীক্ষায় যেসব পানীয়তে উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন, অ্যালকোহলসহ ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- খুলনার জেডএম এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘ডাবল হর্স’, পাবনার ইন্ট্রা ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউএন) লিমিটেডের ‘জিনসিন প্লাস’, কুমিল্লার চান্দিনার জাহান ফুড প্রোডাক্টের ‘মাশরুম’ ও ‘জাহান মাশরুম গোল্ড’, গাজীপুরের সততা এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ‘জিসনিস পাওয়ার’, সাভারের এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘জিন্টার’, ঢাকার তনু নিউট্রিশন ফুড অ্যান্ড কসমেটিকস প্রোডাক্টের ‘তনু লায়ন ফ্রুট সিরাপ’, বগুড়ার উত্তরা ল্যাবরেটরিজের ‘জিনসিন’, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘ওয়াইল্ড ব্রিউ’, ঢাকার থ্রি স্টার ইউনানী ল্যাবরেটরিজের ‘জিন্টার প্লাস জিনসিন’ ও ‘জিনসিন’। গাজীপুরের পুবাইলের বিএনসি এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘হর্স ফিলিংস’, স্নেহা ফুড অ্যান্ড হার্বাল প্রোডাক্টের ‘কোরিয়ান রেড জিনসিং’, ঢাকার রানা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘হাই পাওয়ার ফিলিংস’, সাভারের আসিফ এগ্রো ফুড ও বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের ‘সেভেন হর্স ফিলিংস’, ঢাকার থ্রি স্টার ইউনানী ল্যাবরেটরিজের ‘জিন্টার প্লাস জিনসিন’, দুবাইয়ের ‘ব্রাবিকান’, ‘রেডবাল’, জার্মানির ‘ওটিনজার’, ফ্রান্সের ‘হলসটিন’, থাইল্যান্ডের ‘সিঙ্গা’, অস্ট্রেলিয়ার ‘পাওয়ার হর্স’, হল্যান্ডের ‘রয়েল ডাচ’, ‘ব্রাভারিয়া’ ও ‘থ্রি-হর্সেস’।

ফলের সিরাপ, কার্বনেটেড বেভারেজসহ কম ক্ষতিকর উপাদানসমৃদ্ধ পানীয় উৎপাদনের জন্য বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স (বিডিএস ১১২৩:২০০৭) নিয়ে প্রতারণামূলক ও কর ফাঁকি দিয়ে ক্যাফেইন, ভায়াগ্রামিশ্রিত এনার্জি ড্রিংকস তৈরি হচ্ছে আরও সাতটি ব্র্যান্ডের বেলায়। এগুলো হলো ঢাকার তনু নিউট্রিশন ফুড অ্যান্ড কসমেটিকস প্রোডাক্টের ‘তনু লায়ন ফ্রুট সিরাপ, বনানীর ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের ‘ফু-ওয়াং’, গ্লোব সফট ড্রিংকস নোয়াখালীর ‘রয়েল এনার্জি ড্রিংকস’ ও ‘ব্ল্যাক হর্স’, ধামরাই ঢাকার আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘স্পিড’, গাজীপুরের ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেডের ‘পাওয়ার’।

বিএসটিআই, ঔষধ প্রশাসনকে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রতারণামূলক ভাবে নাম লিখিয়ে দেশীয় ব্র্যান্ডের ১০টি এনার্জি ড্রিংকস উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলো হলো থাইল্যান্ডের ‘সিঙ্গা’, অস্ট্রেলিয়ার ‘পাওয়ার হর্স’, আয়ুর্বেদীয় ফার্মেসি (ঢাকা) লিমিটেডের ‘স্ট্রং-৫০০’ (ইংরেজি ও বাংলা লেবেল), সেফ ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘ট্রিপ-অন’, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের ‘ফু-ওয়াং’, চাঁদপুরের এশিয়া এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘হর্স ফিলিংস’, গাজীপুরের গ্লোবাল বেভারেজ কোম্পানি লিমিটেডের ‘এপি ফিজ’ ও দুবাইয়ের ‘রেডবুল’