কারানির্যাতিত সাংবাদিককে আইনী সহযোগিতা দেবে বিএমএসএফ
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪: দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার শেরপুরে জেলার নকলা প্রতিনিধি শফিউজ্জামান রানা তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য চাওয়ায় কথিত অভিযোগ সৃজন করে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তাঁকে কারাদন্ড প্রদানের ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ আবু জাফর এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবিলম্বে এ সাংবাদিকের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সাংবাদিককে মুক্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আইন উপদেষ্টা প্যানেলের সাথে আলোচনা করেছেন। বিএমএসএফ মনে করে এ ঘটনা অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সরকার যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে, সেই সময়ে একজন সাংবাদিকের তথ্য চাওয়াকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করে ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নকলা উপজেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদ্বয়। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি ও রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ হিসাবে সংবাদ ও সাংবাদিকতার মূলভিত্তিতে কুঠরাঘাতের শামিল। আমরা জানতে পেরেছি, শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ সাংবাদিককে ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার নকলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন। রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, জাইকার কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে সম্প্রতি ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন করেন রানা। এসব প্রকল্পের তথ্য চাওয়ায় রানার ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউএনও। তিনি আরও জানান, গত মঙ্গলবার রানা তার ছেলে শাহরিয়ার জাহান মাহিনকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি চান রানা। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। রানা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে রিসিভড কপি চান। তখন শীলা বলেন, ‘ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেওয়া যাবে না।’ পরে রানা জেলা প্রশাসককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও আরও ক্ষিপ্ত হন। এ সময় ইউএনও রানাকে ভুয়া সাংবাদিক এবং তার ছেলে মাহিনকে ‘বাপের মতো চোর সাংবাদিক হবি’ বলে উক্তি করেন। এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক। সরকারের দেয়া আইনে তথ্য চাওয়াকে তারা (প্রশাসন) অপরাধ হিসাবে গণ্য করে, এ আইনের ব্যথ্যয় ঘটিয়েছেন। যা অত্যন্ত দু:খজনক ও তথ্য প্রবাহকে বাঁধাগ্রস্থ করার শামীল। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে সাংবাদিকদের নি:শর্ত মুক্তি, তাঁকে এহেন ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ ও দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানাচ্ছি।