“পালকি চলো পালকি চলো গগন -তলে আগুন জ¦লে । স্তদ্ধ গায়ে আদুল গায়ে, যাচ্ছে কারা রৌদ্র সারা” কবি সত্যেন্দ্রনাথে লেখা পালকি কবিতা বইয়ের পাতায় আজও থাকলে বাস্তবে নেই এই ্ঐত্যিহের বাহনটি। পালকি ছিল এক সময়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন বাহন । মানুষ বহন করার কাজেই এর ব্যবহার হতো। সাধারনত ধনী গোষ্ঠী এবং সম্ভ্যান্ত বংশের লোকেরা এর মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমন করতেন। এবং বিবাহ কাজে ব্যবহার হতো। কিন্ত এখন তা পুরোপুরি বিলুপ্ত।ধারনা করা হচ্ছে প্রাচীনকালে দেব-দেবীকে আরোহন বা দেব দেবীর মুর্তি বহনের জন্য পালকি সদৃশ বাহন ব্যবহার করা হতো। অনেক প্রাচীন মন্দিরেও পালকি দিয়ে দেবতা বহনের দৃশ্য ভাস্কর্য আকারে তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুদের রামায়নেও আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব ২৫০ সালের সময়ের দিকে পালকির উল্লেখ পাওয়া যায় । ব্রিটিশ শাসন আমলে ইউরোপের উচ্চ শ্রেণীর সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা এই পালকিতে চলাচল করতেন। তবে উপমহাদেশে রেলগাড়ি প্রচলের পর ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের মাঝে পালকির ব্যবহার অনেকটাই কমে আসে ।
বর্তমানে পালকি ব্যবহার একেবারেই নেই। বিশেষ করে ১৯৩০ এর পর থেকে শহরাঞ্চলে রিকশার প্রচলন শুরু হলে পালকির ব্যবহার উঠে যায়। পালকি চাকাবিহিীন একটি বাহন। পালকিকে কয়েকজন ঘাড়ে ঝুলিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। যারা পালকিকে ঘাড়ে বা কাঁধে করে বহন করতেন তাদের পালকির বেহারা বা কাহার বলতো। দেশে সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে যাতায়াতের বাহন হিসেবে পালকির ব্যবহার প্রায় বন্ধই হয়ে যায়। বর্তমানে পালকিকে আমাদের অতীত ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবেই ধরা হয়। বেহারাদের কাঁধ থেকে পালকির স্থান হয়েছে এখন বিভিন্ন যাদুঘরে ।