চাঁদাবাজী ও মারধরের অভিযোগ এনে নরসিংদী মডেল থানার সাবেক ওসি (বর্তমানে মাধবদী থানার ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামান, মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নঈমুল মোস্তাকসহ ৩জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপর আরেকজন আসামী হলো পুলিশের সোর্স সবুজ মিয়া (২৫)। আজ রবিবার বিকেলে নরসিংদীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে শহরের বানিয়াছল এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মুন্সী বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর সিআর ৫৩৫/২০২০। এ ঘটনায় আদালত র্যাব-১১ কে আগামি ১৮ অক্টোবরের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদি হুমায়ুন কবির মুন্সি দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদী মডেল থানাধীন বানিয়াছল এলাকার বটতলা বাজারে কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করে আসছেন। করোনা মহামারির কারনে সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ রাখার ঘোষনা মামলার বাদিসহ আশপাশের ব্যবসায়ীদের জানা ছিল না। গত ২১ জুন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হুমায়ুন কবির তাঁর ছেলে মো. আতিককে দোকানে বসিয়ে বাহিরে যান। তখন নরসিংদী মডেল থানার এসআই মোস্তাক ও তাঁর সোর্স সবুজ বটতলা বাজারে আসেন। সন্ধ্যার পর দোকান খোলা রাখার অপরাধে এসআই মোস্তাক বাজারের ব্যবসায়ী আতিকসহ ইউসুফ মিয়া, সাফায়েত মিয়া, মানিক মিয়া, রুবেল মিয়া ও শাহাদত হোসেনকে জোরপূর্বক মারপিট করতে করতে থানায় নিয়ে যান। পরে থানা থেকে সোর্স সবুজের মাধ্যমে খবর পাঠানো হয় আতিককে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে। পরে বাদী থানায় গিয়ে দেখতে পায় আটক হওয়া ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। তখন মামলার বাদী, ওসি ও এসআইকে অনুরোধ জানান তাঁর ছেলে আতিককে ছেড়ে দিতে। তখন ওসি সৈয়দুজ্জামান ও এসআই মোস্তাক ২ লাখ টাকা দাবি করেন। নতুবা ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যার হুমকি দেন। এমতাবস্থায় ৫০ হাজার টাকা ওসি ও এসআইকে দিলেও বাকি টাকার জন্য বাদীর সামনেই মারপিট করে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে বটতলা বাজারের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক থানায় এসে আতিককে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হন। পরদিন সকালে থানা থেকে একটি পুরোনো ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয় আতিককে। মামলার বাদী হুমায়ুন কবির মুন্সি বলেন, আমি ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন মামলা কিংবা সাধারন ডায়েরি পর্যন্ত নেই। ওসি ও এসআই ২ লাখ টাকা চাইছিল। আমি এসআই মোস্তাক ও সোর্স সবুজের কাছে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। চাহিদা মত টাকা দিতে না পারায় এক ডাকাতির প্রস্তুতির পেনডিং মামলায় আমার ছেলেকে জেলে পাঠিয়েছে। পরে সে ২১ দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়েছে। এব্যাপারে আমিসহ এলাকাবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের প্রস্তুতি নিলে এসআই মোস্তাক বিষয়টি জানতে পেরে আমার ছেলেকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ওই ডাকাতির মামলার চার্জশীটে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করে দেয়। কিন্তু ওই ডাকাতির মামলার এজাহার কিংবা অন্যান্য আসামিরা কেউ আমার ছেলের নাম বলে নাই। এ ব্যাপারে ওসি মো. সৈয়দুজ্জামান বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনো কোন কাগজপত্র পাইনি। আর কোন ঘটনায় মামলা হয়েছে সেটা খেয়াল করতে পারছি না। আমি তাদেরকে চিনি কিনা সেটাও সন্দেহ।