জাকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল ‘সেলিম ওসমান বার ভবন’। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে এই ভবনের উদ্বোধন করেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমীন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, আইন মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলর ও এটর্নী জেনারেল এড. এ.এম আমিন উদ্দিন।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, বিকেএমইএ’র নিবার্হী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বার ভবনের বাইরে নির্মিত ‘সেলিম ওসমান বার ভবন’ এর নামফলকটি উম্মোচণ করেন আইনমন্ত্রী ও অতিথিরা। পরে দোয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা পর্ব।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘অনেকে বলছেন, ডিসেম্বারের ১০ তারিখে খালেদা জিয়াকে দিয়ে বক্তৃতা দেওয়াবেন। কিন্তু আদালতে যে দরখাস্ত দিয়ে তাঁকে মুক্তি করে ছিল আইনজীবীরা। সেই আবেদনে পরিস্কার ভাবে লেখা ছিল, তাঁর শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ যে, তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। তাকে অবশ্যই মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। খালেদা জিয়া যদি ১০ তারিখে সমাবেশে যায়, তাহলে সেই দিনের দরখাস্ত মিথ্যা প্রমানিত হবে।’
মন্ত্রী বলেন, আজকে যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, তারা সোচ্চার। সেদিন বঙ্গবন্ধকে যে রকম ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল, হত্যার উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশকে হত্যা করা। আজকেও তাঁরা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কারণে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই উন্নয়ন থামিয়ে দিতে চাইছে। সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অনেক কিছুই থাকতে পারে।
এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আমি আজকে অতিরিক্ত অসুস্থ। হয়তো অনেক কথা বলতাম। আমি শামীম ওসমানের সাথে একমত হয়ে বলি, আসলেই যদি নারায়ণগঞ্জের সুস্থতার জন্য নতুন বিল্ডিংটা দিয়ে দেয়া যায়, তাহলে নারায়ণগঞ্জের মানুষের অনেক ভালো হবে। আমি অবাক হয়েছি, একদিন আইনজীবীরা আমার অফিসে গিয়ে উপস্থিত হয়। তারা বলে ভবনটি আমার নামে করবে। তাদের কোন দাবি ছিলো না। আমি বলেছিলাম আমার নামে এই ভবন করতে দিবে না। তুমি যদি সকল আইনজীবীদের দিয়ে ইজিএম করতে পারো, তাহলে নামকরণ করতে পারো।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমি আমার বন্ধুর পাশে বসে খুব আনন্দিত। কারণ তিনি নারায়ণগঞ্জের জন্য অনেক কিছু করেছেন। দীর্ঘদিন পর আমি আমার বন্ধুর পাশে বসে আমি খুব শান্ত। আমি আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, আপনার নামকরণ করে এতো বড় একটা অনুষ্ঠান করেছেন। আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারিনি যে, আইনমন্ত্রীকে এভাবে আজকে পাশে পাবো, বন্ধুর পাশে বসে আমি বক্তব্য দিতে পারবো
এমপি শামীম ওসমান বলেন, আজকে আমার বড় ভাই- সেলিম ওসমান সাহেবের নামে ভবনটি করা হয়েছে। যদিও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের পাশেই ভবনটা ৬ বছর ধরে এত সুন্দর একটি ভবন পড়ে আছে, সেখানে উনার ছোট ভাইয়ের বন্ধু হিসেবে, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার একজন প্রিয় মানুষ হিসেবে আমি হাত জোড় করে বলছি, নারায়ণগঞ্জে একটি হার্ড ইনিষ্টিটিউট নাই। আমি বিশ্বাস করি, মাননীয় মন্ত্রী যদি এখন প্রধানমন্ত্রীকে বলে ভবনটিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হক, তাহলে দিয়ে দিবে এবং নারায়ণগঞ্জের মানুষ হার্ট ইনিষ্টিটিউটটা পাবে।
এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, অত্যন্ত কষ্ট লাগে যখন শুনি যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি। পৃথিবীর কোন দেশে এমনা দেখা যায় না। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি এতটুকুই বলবো যে, বাংলার মাটিতে আর কোন দিন তত্বাবাধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন হবে না। সংবিধানে যেভাবে আছে, সে ভাবেই নির্বাচন হবে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আলোচনা পর্বের আগে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও আগত অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান করে আইনজীবী নেতৃবৃন্দরা।
অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিদের নিয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দরা নৈশ ভোজ এবং পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।