মোঃ লোকমান হোসেন…..
নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ডিস ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের
দু’গ্রুপের মধ্যে হামলা- সংঘর্ষ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলার ঘটনায় নারী সহ ৩ জন আহত হয়েছেন।এর জের ধরে
রোববার রাতে কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের ড্রেজারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ
নিয়ে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।রাতে দুই পক্ষ মুখোমুখী অবস্থানের কারণে
যেকোনো সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।এলাকায় থমেথমে পরিস্থিতি বিরাজ
করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে নাসিক ২৩ নং
ওয়ার্ড খান বাড়ী এলাকায় যুবলীগ নেতা খান মাসুদের বাড়িতে হামলার ঘটনা
ঘটে।হামলায় আহত স্বপ্না বেগম, আসিফ ও অপুকে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার
জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, কোয়াবের অনুমতি নিয়ে শ্যামল নামে এক দীর্ঘ প্রায় ৩০
বছর যাবত ডিস ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।প্রায় এক বছর আগে থেকে শহরের পাইকপাড়া
এলাকার কাউন্সিলর আব্দুল করিম ওরফে ডিস বাবুর লাইন বন্দরে ঢোকানোর জন্য
বিভিন্নভাবে পায়তাঁরা চালিয়ে আসছে একটা সিন্ডিকেট।কয়েকমাস আগে উত্তপ্ত
পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা একেএম
সেলিম ওসমানের নির্দেশে ওই চক্রের অপতৎপরতা বন্ধ করা হয়। কিন্তু জাপা
নেতা আবুল জাহের সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করার পর থেকেই পূনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠে
ওই সিন্ডিকেট।
স্থানীয় ক্যাবল ব্যাবসায়ী এসএম পারভেজ আলম বাদী হয়ে
ছাত্রলীগ নেতা বিন্দু সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
করেছেন।কিন্তু গতরাতে লাইন টেকনিশিয়ান হাসান ও সাব্বির কে মারধর করে
পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিন্দু ও দুলালের লোকজন।
জেলা যুবলীগ নেতা খান মাসুদ অভিযোগ করে বলেন,দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে
মাঠে নেমেছে এসব অনুপ্রবেশকারীরা।যেসব ব্যাবসায়ীরা আগে থেকে এলাকায়
ক্যাবল ব্যাবসা করে আসছেন,তাদের পেটে লাথি দিয়ে ডিস বাবুর লাইন বন্দরে
ঢুকাতে চাইছে তারা। বিষয়টি মিমাংসার জন্য দু’পক্ষকে অফিসে ডাকেন অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম । কথামতো সার্কেল অফিসে যান তারা।তাদের
অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলর দুলাল প্রধান ও বিন্দুর নির্দশে ৩০/৪০ জন ধারালো
অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়।এসময় তারা বাড়িতে থাকা একটা মোটর
সাইকেল ও দরজা জানালা ভাংচুর করে।বাধা দিলে তার বোন স্বপ্না বেগম ও
আসিফ এবং অপুকে কে বেদম মারপিট করে আহত করে তারা।আহতদের জেনারেল
হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর দুলাল প্রধান জানান, গতরাতে তার অফিসের
সংলগ্ন ডিস লাইনের মেশিন রুমে ঢুকে সংযোগের তার ও সরঞ্জামাদি নিয়ে গেছে
রাজু ও তার লোকজন। রোববার রাতে যুবলীগ নেতা খান মাসুদের লোকেরা বন্দর
ঘাটে থাকা তার ড্রেজারে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গতরাতে
লেজারার্স এলাকায় তার অনেক লাইনের ক্যাবল কেটে নিয়েছে পারভেজ আলমের
লোকেরা।।দেওয়ান বাড়ী এলাকায় সংযোগের তার কাটার সময় হাসান ও সাব্বিরকে
হাতেনাতে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে
পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে প্রতিপক্ষ।
জানতে চাইলে ওসি ফখরুদ্দিন ভুইয়া জানান,ডিস ব্যাবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে
দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যুবলীগ নেতা খান মাসুদ ও তার চাচা
রোকন উদ্দিন খান এবং চঞ্চল খানের বাড়িতে হামলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন,একপক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।এ
বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘বি’সার্কেল
সাহেব সিদ্ধান্ত দিবেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।।