অবশেষে মারা গেলেন নারায়ণগঞ্জের বন্দরের এক সন্তানের জননী অগ্নিদগ্ধ নিপা আক্তার (২০)। শেখ হাসিরা বার্ণ ইউনিটে ৫দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় মারা যান তিনি। বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম নিপার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর-ঘারমোড়া এলাকায় পরকিয়ায় বাধা দেয়ায় গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে নিপার স্বামী সজল ও তার পরিবারের সদস্যরা। এতে নিপার শরীরের ৯০ ভাগ দগ্ধ হয়। প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু নিপাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা উৃন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে পাঠায়। সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যান নিপা।
এ ব্যাপারে বুধবার নিপার বড় ভাই মোহাম্মদ হোসেন বন্দর থানায় মামলা করেন। মামলায় নিপার স্বামী সজল, শ^শুর নাসের, শাশুড়ী আক্তারী বেগম, দেবর মুন্না ও অনিককে আসামী করা হয়েছে।
মোহাম্মদ হোসেন জানান, ৩ বছর আগে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ –চরঘারমোড়া এলাকার নাসের মিয়ার ছেলে সজলের সাথে নিপা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী সজল ও শ^শুর নাসের ও শাশুড়ী আক্তারী বেগম, ছেলে মুন্না ও অনিক যৌতুকের জন্য বোনকে নানা ভাবে নির্যাতন করছে। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সজল অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সজলের পরকিয়ার বিষয়টি নিপা আক্তার জেনে যাওয়ায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। মঙ্গলবার স্বামী সজল, শ^শুর নাসের, শাশুড়ী আক্তারী বেগম, ছেলে, মুন্না ও অনিক নিপাকে বেদম পিটিয়ে আহত করে। এরপর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। শনিবার বার্ণ ইউনিটে মারা যায় বোন। বার্ণ ইউনিটে বোনের লাশ নিতে এসে ভারাক্রান্ত মনে বোনের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেন মোহাম্মদ হোসেন।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার যৌতুকের জন্য গৃহবধূ নিপাকে মারধরের পর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে শ^শুর বাড়ির লোকেরা। তাকে শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার সকালে সাড়ে ৯ টায় মারা যায়। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারে জোরালো অভিযান চলছে। মামলার বাদীকে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সব জায়গায় সোর্স লাগানো আছে। অচিরেই আসামীদের গ্রেফতারে সক্ষম হব।