সরকারি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে আরও এক পুলিশ সুপারকে। তার নাম জিল্লুর রহমান। এ নিয়ে গত এক মাসে সাত জনকে অবসরে পাঠানো হলো। অবসরে পাঠানো হয়েছে এক সচিবকেও।আগের ছয় জনের মতো জিল্লুরকে অবসরে পাঠানোর কারণ হিসেবেও জনস্বার্থের কথাটি জানানো হয়েছে। তবে কী সেই স্বার্থ সেটি উল্লেখ করা হয়নি।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা-১ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের সদস্য অতিরিক্ত কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ব্যারিস্টার মো. জিল্লুর রহমানকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া হলো।এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছে আদেশে। অর্থাৎ এই অবসর ইতিমধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান একসময় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। সে সময় উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সারাদেশে ডিসি-এসপিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এক বৈঠকে এই পুলিশ সুপার বলেছিলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমাদের চাকরি রাখবে না।’ তার এমন বক্তব্যের জবাবে নির্বাচন কমিশনার (তৎকালীন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘আপনার পুলিশের এ সম্মানজনক পোশাক শরীর থেকে খুলে ফেলা উচিত।’
এর আগে যাদেরকে অবসরেগত ১৬ অক্টোবর প্রথম বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় তথ্যসচিব মকবুল হোসেনকে। আচমকা এই আদেশ জারির পেছনে কী কারণ, এ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার মধ্যে দুদিন পর অবসরে পাঠানো হয় সিআইডির মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী ও মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা এবং পুলিশ অধিদপ্তরের মো. শহীদুল্ল্যাহ চৌধুরীকে। তারাও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ছিলেন।এরপর ৩১ অক্টোবর অবসরে পাঠানো হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির পুলিশ সুপার আলমগীর আলম ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার মাহবুব হাকিমকে।
গত ১৬ নভেম্বর অবসরে পাঠানো হয় রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত আলী হোসেন ফকিরকে। সেখানে সংযুক্ত করার আগে তিনি খুলনা তৃতীয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন- এপিবিএনের অধিনায়ক ছিলেন।শুরু থেকেই সরকার এই বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিল। তবে ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে এক প্রশ্নে বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। চাকরির ২৫ বছর বয়স হলে যদি কারও কর্মদক্ষতার ঘাটতি পড়ে যায়, দেশপ্রেমে ঘাটতি পড়ে যায়, তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।’তবে কর্মকর্তার দেশপ্রেম ও কর্মদক্ষতায় কী ঘাটতি পড়েছিল, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।