শামসুজ্জোহা স্কুলের ২ শিক্ষকে হত্যার হুমকি
হুমকিদাতাকে সনাক্ত করেছে পুলিশ
বন্দরের শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষককে মোবাইলে হত্যার হুমকিদাতাকে পুলিশ সনাক্ত করেছে। গত ১৪ অক্টোবর স্কুলের প্রধান শিক্ষক এরশাদ উল্লাহ ও সহকারী শিক্ষক নাফিজ ইমতিয়াজকে ০১৬৮৮৭৫৫৬৯৮ হতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক এরশাদ উল্লাহ গত ১৮ অক্টোবর থানায় জিডি করেন, জিডি নং-৮৬৮ ও সহকারী শিক্ষক নাফিজ ইমতিয়াজ ১৯ অক্টোবর থানায় জিডি করেন, জিডি নং-৯১৫। পরে পুলিশ এ জিডির আলোকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হুমকি দেয়া মোবাইলটি সনাক্ত করেন। এ মোবাইলটি স্কুলের পাশের চরগ্রামের রাজু আহাম্মেদ স্ত্রী লিপি বেগমের। পরে পুলিশ চরগ্রামে গিয়ে লিপি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন পুলিশ নিশ্চিত হয় মহিলার মোবাইল তার ছেলে আতিক নিয়ে তার প্রতিবেশী আনোয়ার মিয়ার ছেলে স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র তৌহিদ মোবাইল নিয়ে হুমকি দেয়। এ ব্যপারে ছাত্রের পিতা আনোয়ার বলেন, আমার ছেলে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক সাইফুল আলম মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে আমার ছেলের মাধ্যমে হুমকি দেয়ায়। এ ব্যপারে স্থানীয় মাহবুব মেম্বার বলেন, এলাকায় পুলিশ এসে তদন্ত করে লিপি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এবং হুমকিদাতাকে সনাক্ত করেছে। এ ব্যপারে হুমকিদাতা স্কুলের ছাত্র তৌহিদ জানায়, আমি সাইফুল আলম স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। স্যার আমাকে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে বলেন, গালাগালি করতে। আমি পাশের বাড়ির ভাবির ছেলে আতিক আমার বন্ধু তার মায়ের মোবাইল এনে স্যারের কথায় ঐ নাম্বারের হুমকি দেই এবং গালাগালি করি। স্যার আমাকে এও বলেন যে নাম্বার থেকে হুমকি দিয়েছি সেই সীমটি ভেঙ্গে ফেলতে। কিন্তু মোবাইলটি অন্যজনের কিভাবে সীম নষ্ট করব। এ জন্য করতে পারিনি। স্যার আমাকে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার লোভ দেখায়। এ ব্যপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এরশাদ উল্লাহ ও সহকারী শিক্ষক নাফিজ ইমতিয়াজ বলেন, আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছি। এখন পুলিশ এ বিষয়টি আইনগত ব্যবস্থা নেবে। আমরা হুমকিদাতার বিরুদ্ধে মামলা করব। এ ব্যপারে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক সাইফুল আলম বলেন, সেই ছাত্র কেন আমার নাম বলেছে আমি জানিনা। আমি তাকে পড়াই না। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। স্কুল সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক এরশাদ উল্লাহকে স্কুল থেকে সাইফল আলম নানা ষড়যন্ত্র করে সাময়িক বহিস্কার করায়। তখন তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আইনী ভাবে পুনরায় স্কুলের দায়িত্ব ফিরে এলে সাইফল আলম স্বপদে চলে যায়। এ আকোশ থেকে ছাত্রকে দিয়ে হুমকি দেয়াতে পারে। এদিকে স্কুলের সভাপতি মাকসুদ চেয়ারম্যান বিষয়টি জেনে কঠোর ভাবে বিষয়টি আমলে নেন। তার অগোচরে এধরনের কর্মকান্ড ঘটানো হয়। তিনি সকল শিক্ষকদের হুশিয়ার করে দেন। এ ব্যাপরে স্কুলের সভাপতি ও মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেয়া হয়েছে এবং থানায় জিডি করা হয়েছে তা আমি অবগত আছি। পুলিশ হুমকিদাতাকে সনাক্ত করেছে তা আমাকে স্থানীয় মেম্বার জানিয়েছে। যেহেতু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে শিক্ষক শিক্ষক কাঁদাছুড়াছড়ি করবে তা মেনে নেয়া যাবে না। আমরা ম্যানেজিং কমিটি বসে এর সঠিক ব্যবস্থা নেব। দুষি কাউকে ছাড় দেব না। এ ব্যপারে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার এএসআই সোহেল রানা বলেন, আমি জিডির সিডিআর বের করে চরগ্রামে গিয়ে মোবাইলের মালিক লিপি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বিষয়টি আরো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিভাবকরা জানান, সাইফল আলম এর আগেও প্রধান শিক্ষককে স্কুল থেকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র করেছে। এই হুমিকিও সে ছাত্রদিয়ে দেয়ায়। কারণ হুমকিদাতা ছাত্র তার আত্বিয় বলে জানা গেছে।