বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে প্রযোজক-পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, ইউটিউব চ্যানেল এসআইএস মিডিয়ার এম. এন ইস্পাহানি ও লাভা মুভিজের মো. জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানোর পর অভিযুক্ত চিত্রনায়ক মান্না অভিনীত ‘বীর সৈনিক’ ছবিটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব থেকে সরানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ছবিটি ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। এবং ২৮তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করে। ছবিতে অভিনয় করেছেন মান্না, মৌসুমী ও হুমায়ুন ফরীদি। ছবির পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এটিএম মাকসুদুল হক ইমু। তিনি অভিযোগ করেছেন, ঝন্টু পরিচালিত ‘বীর সৈনিক’ সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।
সিনেমাটির প্রচার ও প্রদর্শন স্থগিত চেয়েছেন ইমু অভিযোগ করেছেন, সিনেমাটিতে কোথাও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়নি এবং মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমার কোথাও ৭ মার্চের উল্লেখ নেই। এসএস মাল্টিমিডিয়ার ইউটিউবে সিনেমাটি প্রকাশ করা হয়েছে। সিনেমায় অভিনেতা যখন ৭ মার্চের কথা বলেন, ঠিক সেখান থেকেই কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়েছে- যা স্পষ্ট দৃশ্যমান এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
‘কিন্তু ২০০৯ সালে আদালত যে রায় দিয়েছেন, সেটিকে অমান্য করে ছবির সিস মিডিয়া (SIS Media) নামের ইউটিউব চ্যানেলে বিকৃত ইতিহাসের ছবিটির প্রচার চালানো হচ্ছে। এ জন্যই ছবিটির সঙ্গে জড়িত প্রধান তিনজনকে আদালতের আদেশ অমান্য করায় আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও ৭ মার্চের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গেও জড়িত তারা।’ গেল ৩ সেপ্টেম্বর ইমুর পক্ষে নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী মোস্তফা কামাল মুরাদ।
এ বিষয়ে নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু সময় নিউজকে জানান, ছবিটি বিএনপির সময়ে নির্মাণ করা। সেসময় আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই ছবি নির্মাণ করি। তিনি ছাড়া দেশ যেমন স্বাধীন হতো না, তার ৭ মার্চের ভাষণ ছাড়া যেমন জনতা উত্তেজিত হতো না, যুদ্ধেও যেত না। তেমনি জাতির পিতাকে ছাড়া আমার ছবিটিও হতো না। আমি সবকিছু মিলেই ছবিটি নির্মাণ করি। সেন্সর বোর্ডে ছবিটি জমা দিলাম সেন্সর সনদের জন্য। তখন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থাকায় তারা আমার ছবিটি রিলিজ দেওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেবেন না। উপায় ছিল না আমার। কারণ ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় করে ছবিটি নির্মাণ করি। সেসময় ছবিটিই ছিল আমার সম্বল। তাই ছবিটি সেন্সর বোর্ডের কথা অনুযায়ী আমি ছাড়পত্র নিতে বাধ্য হয়েছি।
এদিকে সিস মিডিয়ার এম. এন ইস্পাহানি, যিনি পরিচালক ইস্পাহানি আরিফ জাহান নামেই পরিচিত। তিনি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘ছবিটি আপলোড হওয়ার আগে তাতে কী ছিল আমি দেখিনি। আমি নিজেই বঙ্গবন্ধুরের আদর্শের লোক। আমি শুধু ছবিটির স্বত্ব কিনেছি। তখন জানতাম না এখানে বিতর্কিত বিষয় আছে। আইনি নোটিশ পাওয়ার পর আমরা সেটি ইউটিউব থেকে সিরিয়ে দিয়েছি। প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে।’