বরগুনার পাথরঘাটা থেকে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৪শ জেলেসহ ৪১টি ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার থেকে সাগর উত্তাল থাকায় বেশ কিছু ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে নিখোঁজ ট্রলার মালিকদের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুজন হাওলাদারের মালিকানাধীন এফবি হাওলাদার নামের একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটলেও তাদের ১৭ জেলেকে অন্য একটি ট্রলার উদ্ধার করে পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটে নিয়ে এসেছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রলার মালিক, ট্রলার ও জেলেদের নাম জানা যায়নি। মো. মাসুম মিয়া জানান, কয়েকদিন আগে একটি নিম্নচাপ শেষ হয়েছে। এর পরেই উপকূলের জেলেরা তাদের ট্রলারে রসদ নিয়ে মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে যায়। এদিকে আবারও নিম্নচাপ শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত পাথরঘাটা উপজেলায় ৪১টি এবং মহিপুরে আরও ১১টি মাছ ধরা ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া এফবি হাওলাদার ট্রলারটি ডুবে গেলেও তাদের জেলেদের উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ৪১টি ট্রলারের কোনো খোঁজ না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কোস্টগার্ডসহ সরকারি দপ্তরগুলোকে জানানো হয়েছে। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জেলেদের সন্ধানে বেশ কয়েকটি ট্রলার উদ্ধার অভিযানে কাজ করে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে জেলেসহ ট্রলারগুলো সাগরে ডুবে যেতে পারে। বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. দুলাল মাস্টার বলেন, হঠাৎ করে নিম্নচাপ শুরু হলে এফবি হাওলাদার নামের একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। পাথরঘাটা আনছার খানের মালিকানাধীন ট্রলারের মাঝি ইসমাইল হোসেন ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলেদের ভাসতে দেখে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। উদ্ধারকৃত জেলেরা সুস্থ আছেন। তবে এখন পর্যন্ত ডুবে যাওয়া সেই ট্রলারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঝড় শুরু হওয়ার পর ওই ট্রলারগুলো নিখোঁজ হয়। এ কারণে ট্রলারগুলো ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কেএম সাফিউল কিঞ্জল বলেন, গত ২ দিন ধরে নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় অনেক ট্রলার ডুবি ও জেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা শুনেছি। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে পাথরঘাটা, হাতিয়া, চরফ্যাশন, নিজামপুর, পায়রা পোর্টসহ মোট ৬টি টিম গভীর সমুদ্রে জেলেদের উদ্ধার অভিযানে রয়েছে এবং গতকালও ছিল। আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে এ উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে যা সারাদিন চলমান থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রলার মালিক সমিতি থেকে বলা হয়েছে ৪১টি ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। তবে আমরা ট্রলারের জেলেদের নাম সংগ্রহ করার কাজ করছি। আমাদের কাছে নাম আসছে। এখন পর্যন্ত মোট ১৮২ জন নিখোঁজ জেলের নাম আমাদের হাতে এসেছে।