শ্রম অধিপ্তর ও সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর ১৪৫ টাকা মজুরির আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক নেতারা। তবে সাধারণ শ্রমিকরা এর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন।শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে বৈঠকের পর চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে আমাদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে আমাদের দাবি-দাওয়া তাকে জানানো হবে। তাই তার আশ্বাসে আমরা আপাতত ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি।’
রোববার থেকে সব শ্রমিক কাজে যোগ দেবে বলেও জানান নৃপেন পাল।এদিকে, নেতাদের এই সিদ্ধান্তের পর শ্রম দপ্তরের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ শ্রমিকরা। তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তারা।এ সময় সমিতির নেতাদের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ শ্রমিকরা।অঞ্জন গোয়ালা নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবি জানিয়েছি। এখন মাত্র ২৫ টাকা মজুরি বাড়ালে কিভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করবো। এই বাজারে ১৪৫ টাকায় কিভাবে চলবো।’তিনি বলেন, ‘নেতারা আপোষ করতে পারেন। কিন্তু আমরা আপোস করবো না। ধর্মঘট চালিয়ে যাবো।’
চা শ্রমিকদের সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদ।তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের প্রতি খুবই আন্তরিক। তারই নির্দেশে আমি আজকে এখানে এসেছি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা মজুরি বাড়াতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নিজে আরও ৫ টাকা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।’
আব্দুস শহীদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে চা শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে বসবেন।’
বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চা শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কাল থেকে তারা কাজে যোগ দেবেন।’এদিকে, আজ বিকেলে সিলেট ও হবিগঞ্জের চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বসবেন স্ব স্ব জেলা প্রশাসক।প্রসঙ্গত, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন দেশের সব চা বাগানের শ্রমিকরা।