চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে বহিষ্কার হয়েও চূড়ান্ত পরীক্ষার আসনে বসেছেন ছাত্রলীগের দুই কর্মী।আজ বুধবার (৩ আগস্ট) বহিষ্কৃত রাকিব হাসান ও ইমন আহমেদকে দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে। তারা দুজনই দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দুই ছাত্রীকে হেঁটে যাওয়ার সময় হেনস্তা করেন চারজন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যৌন হেনস্তার পর উঠে আসে এ ঘটনাটিও। ঘটনার ১০ মাস পর গত ২৫ জুলাই উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান জড়িত চারজনকে বহিষ্কারের তথ্য জানান।নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদকালে ক্লাস ও পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞাসহ বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না। কিন্তু বহিষ্কারের পরও বুধবার তাদের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে।এ বিষয়ে দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাইনি। বহিষ্কারাদেশ পেলে তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।’বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, বহিষ্কৃতরা পরীক্ষা দিলেও তা আপনা-আপনি বাতিল হয়ে যাবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরদিন থেকেই তাদের বহিষ্কার আদেশ কার্যকর হবে।এখন পর্যন্ত বিভাগে চিঠি না পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সভায় হয়েছিল। এ সভার লিখিত কোনো আদেশ এখনো তৈরি হয়নি। মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুতই চিঠি পাঠানো হবে।
হেনস্তার শিকার এক ছাত্রী সময় সংবাদকে বলেন, ‘আন্দোলন থামিয়ে দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন নাটক করেছিল। তা না হলে তারা কীভাবে পরীক্ষা দেয়। যদি বহিষ্কার আদেশের মধ্যে পরীক্ষা দিতে পারে, তাহলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সময়মতো বের হয়ে যাবে। তাহলে বহিষ্কার করে লাভ কী হলো?’কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতির কারণেই ক্যাম্পাসে বারবার ছাত্রী হেনস্তা ও যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া অন্যতম শিক্ষার্থী আশরাফী নিতু। তিনি বলেন, দাবি মেনে নেয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের শান্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো আদতে বাস্তবায়ন করা হয়নি।গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ঘটনার ১০ মাস পর গত ২৫ জুলাই উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান জড়িত চারজনকে বহিষ্কারের তথ্য জানান।