জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে এবং দেশের উন্নয়নবিরোধী অগণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার শপথ এসেছে আওয়ামী লীগের ‘বিজয় শোভাযাত্রা’ থেকে। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দলটির নেতারা বলেছেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই, এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। এখনো সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালির ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরের পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড এবং মিরপুর রোড হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাসভবন ধানমন্ডি বত্রিশ নাম্বারের ঐতিহাসিক ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয় শোভাযাত্রাটি। এর আগে ‘বিজয় শোভাযাত্রা’ ঘিরে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। নেতাকর্মী থেকে সর্বস্তরের মানুষ উৎসবের আমেজ নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। কাকরাইল, মৎসভবন, শাহবাগ, এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। নানা সাজে ব্যানার, ফেস্টুন প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির হন নেতাকর্মীরা। হাতি-ঘোড়ায় চড়েও আসেন কেউ কেউ। বিজয় শোভাযাত্রায় স্থান পায় সরকারের উন্নয়ন পরিক্রমাও। কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছিলো, তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই দেশের স্বাধীনতাকে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। কিন্তু বিভিন্ন পথ পরিক্রমার মধ্য দিয়ে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বাধীনতা উদযাপন করতে পারছি।’
স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতার ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা তুলে ধরে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এই স্বাধীনতার জন্য ২৩ বছরের মধ্যে সাড়ে ১৩ বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেছিলেন। দুইবার ফাঁসির মঞ্চের আসামি হয়ে বাংলার মানুষের জীবনের জয়গান গেয়ে মুক্তিপাগল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বঙ্গবন্ধু যখন এই দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে সপরিবারের হত্যার মধ্য দিয়ে নব্য পাকিস্তান সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। যখন দল ভাঙার রাজনীতি এই দেশে জিয়াউর রহমান শুরু করে, এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হত্যা করে; জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে, সেই মুহূর্তে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে এসে হাল ধরেন।’ বঙ্গবন্ধুর মতো মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে আমু বলেন, ‘তার নেতৃত্বে যখন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করছি তখন বার বার তার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতোই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তিনি এগিয়ে গিয়েছেন। ১৯ বার মৃত্যুপথ যাত্রী শেখ হাসিনা জীবিত আছে বলেই বঙ্গবন্ধুর সেই অসমাপ্ত কাজ, তিনি যেটা চেয়েছিলেন; বাঙালি জাতির পৃথিবীর বুকে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।