রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বে যে কোনো স্থানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। ডাক দিলেই হাজির হয়ে যাব। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তি মানুষের সকল স্বাধীনতার মূলমন্ত্র। ৫০ বছর আগে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সংবিধানে শান্তির কথা বলতেই লেখা হয়েছে, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। এ কারণেই বঙ্গবন্ধু থেকে তিনি বিশ্ব নেতা হয়ে উঠেছিলেন।
নতুন বিশ্বে নানান চ্যালেঞ্জ লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের দুর্বলতা বের করে দিয়েছে। জলবায়ু সংকট মানব জাতিকে বিপদে ফেলছে। সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা গেলেই বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত হবে। বিশ্ব শান্তি সম্মেলন উদ্বোধনের আগে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়। থিম সঙ্গীত, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার এবং রোহিঙ্গাসহ নির্যাতিত মানুষের ওপর ভিডিও ক্লিপ পরিদর্শন করা হয়। সম্মেলনের সভাপতি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিশ্ব এখন বিভিন্নভাবে বিভক্ত। টিকা পেতেও এখন বিশ্ব বিভক্ত হয়ে গেছে। সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার। বিশ্বে মাত্র ১ শতাংশ মানুষ বিশ্বের অর্ধেক সম্পত্তির মালিক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের জন্য সামাজিক ন্যায় বিচার ও শোষণ থেকে রক্ষা করতে সংগ্রাম করে গেছেন। আমাদের সংবিধানের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে মুজিবের এই দর্শন প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণই বিশ্ব শান্তির কথা বলেছেন।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন রেকর্ডকৃত বক্তব্যে বলেন, শান্তির জন্য সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারি থেকে বাচঁতে ধনী-গরিব নির্বিশেষে টিকা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, কেউ একা বিশ্বে নিরাপদ নয় যতক্ষণ পর্যন্ত সকলে নিরাপদ হবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সারাজীবন শান্তির উন্মেষণ করেছেন। মানুষের জন্য শান্তির খোঁজই তাকে ক্যারিশম্যাটিক নেতা হিসেবে উপস্থাপিত করেছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানের শুরুর বক্তব্যে সম্মেলনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন।
সম্মেলনে শান্তি রক্ষায় কাজ করা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কবি, সাহিত্যিক, নোবেল বিজয়ী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, শিল্পী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক, মানবাধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা অংশ নিচ্ছেন। এতে বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে ৬০ জন প্রতিনিধি সশরীরে আসবেন। বাকি ৪০ জন প্রতিনিধি ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন।