সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ি টাইগার ফারুক ওরফে চিকনা ফারুকের আরেক সহযোগিকে ১৮ কেজি গাঁজা ও ৯৬ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তার নাম রাকিব হাসান। বাবার নাম জলিল মিয়া। সে মিজিমিজি পাগলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে র্যাব-৩ এর একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার আরও ৪ সহযোগি ওমর ফারুক (৩২), সোলায়মান (৩৫), ফরহাদ খান (২৮) ও মোঃ অয়ন (১৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-৩ এর সদস্যরা গ্রেপ্তারকৃতদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এরআগে ২ এপ্রিল রাতে টাআগার ফারুকের অন্যতম সহযোগি ও লোহা চোর মোটা কবিরের ক্যাশিয়ার মিলনকে ১৯ কেজি গাঁজাসহ র্যাব-৩ এর একটি টিম গ্রেপ্তার করে। সে এখন কারাবন্দি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শরীফ আহমেদ জানান, রাকিব হাসান, ওমর, সোলায়মান, ফরহাদ ও অয়নকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও ১৮ কেজি গাঁজাসহ আটক করে র্যাব। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক বিরোধী আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদী র্যাব।
এদিকে মাদক ব্যবসায়ি রাকিব হাসান গ্রেপ্তারের পর থেকে নানাভাবে দেনদরবার শুরু করে টাইগার ফারুক। যাতে তার সহযোগির বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার না পায়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়ও টাইগার ফারুকের লোকজনের আনাগোনা লক্ষ করা গেছে। শনিবার আসামীদের থানায় হস্তান্তর করার পর থেকে তারা তৎপরতা চালায় যাতে সাংবাদিকরা আসামীদের ছবি তুলতে না পারে।
প্রসঙ্গত: গত ২ এপ্রিল রাতে মাদক ব্যবসায়িদের শেল্টারদাতা ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ি টাইগার ফারুকের অন্যতম সহযোগী মিলন (৩২)কে ১৯ কোজি গাঁজাসহ ঢাকার পল্টন থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩ এর একটি টিম। বর্তমানে মিলন মাদক মামলায় কারাবন্দি। যুবলীগের ব্যানারকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের গুটি কয়েক শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা করে টাইগার ফারুক মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই সিন্ডিকেট সিদ্ধিরগঞ্জে পাইকারী ও খুচরা মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায় সাথে জড়িত টাইগার ফারুক যুবলীগের নাম ব্যবহার যুবলীগের কথিত একটি কার্যালয়ও বানিয়ে নিয়েছে মিজমিজি টিসি রোড এলাকায়। ওই কার্যালয়েনে মাদক কেনা-বেচা ও সেবনের মহোৎসব এবং শলাপরামর্শ হয়।
এরআগে টাইগার ফারুকের ভাই জসিম ছিনতাই করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ফারুকের আরেক ভাই জুয়েলও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এছাড়া ফারুক নিজেও হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার রীতিমত একটি অপরাধী চক্র গড়ে তুলেছে চিকনা ফারুক। আর গোপন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যুবলীগের নাম দিয়ে কথিত কার্যালয় বানিয়ে নিয়েছে। ওই কার্যালয়ে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের ছবি টানিয়ে রেখেছে। এই ছবি বিক্রি করে চতুর ও টাউট ফারুক তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।