করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। আর এর সাথে বেরিয়ে আসছে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতার চিত্র। প্রথম ঢেউয়ের পর পর্যাপ্ত সময় পাওয়া গেলেও দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অথচ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে করোনা চিকিৎসার সব ধরনের সামগ্রী।
প্রথম ঢেউয়ের প্রকোপ কমে আসার বেশ কিছুদিন পর দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে আঘাত হেনেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সংক্রমণের মাত্রা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সরকারি হাসপাতালে খালি থাকছে না কোন আইসিইউ, এমনকি সাধারণ শয্যাও। বেসরকারি হাসপাতালেরও প্রায় একই অবস্থা।
গেল বছর করোনা শুরুর পরপর দেশের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। কোভিড নিয়ন্ত্রণ কারিগরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী কোভিড চিকিৎসার সরঞ্জামাদি কেনে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সিএমএসডি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব সামগ্রীর বেশিরভাগই গুদামবন্দি হয়ে আছে।
করোনা চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে গেল এক বছরে সিএমএসডি:
তিন ধরনের আইসিইউ শয্যা কিনেছে ৫৫০টি। এরমধ্যে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজধানীতে ১২৪টিসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়েছে ২২৯টি।
হাইফ্লো নজেল ক্যানোলা কেনা হয়েছে ৫১০টি। যার মধ্যে সরবরাহ হয়েছে মাত্র ১৭৫টি।
অনুদানসহ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সংগ্রহ করা হয়েছে ২,৭৬০টি। সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৬৫২টি।
আইসিইউ ভেন্টিলেটর অনুদান পাওয়া গেছে ২৮৭টি। যার মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে ১২৬টি।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান জানান, যে পরিমাণ কোভিড চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রয়েছে তাতে সরবরাহে কোন সংকট হবেনা। বাড়াতে হবে হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা।
তিনি বলেন, ‘সিএসএসডি কিন্তু আইসিইউ বেড রেখেছে। যে যখন চাচ্ছেন আইসিইউ বেড আমরা ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে সরবরাহ করে দিচ্ছি। হাসপাতালগুলো তাদের প্রয়োজনীয় আইসিইউ বেড নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাকেও তো রুম তৈরি করতে হবে। তার সঙ্গে কিছু এক্সেসরিজ যোগাড় করার সময় দিতে হবে। সক্ষমতা তৈরি করতে উনাদের হয়তো একটু সময় লাগছে। যখস সক্ষমতা তৈরি হবে নেবেন। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের। আগামী এক বছরে দেশে কোভিড মোকাবিলার জন্য যা প্রয়োজন সিএমএসডি অর্জন করেছে।’
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর পার হয়েছে ১৩ মাস। করোনা রোগীদের আইসিইউ শয্যার জন্যে যেখানে হাহাকার চলছে সরকারি হাসপাতালগুলোতে, সেখানে এতদিন সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও এত চিকিৎসা সামগ্রী গুদামবন্দি হয়ে আছে কেন? এ বিষয়ে জানতে ৪ দিন যোগাযোগ করেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।