নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নৌপথে চাঁদাবাজীর অভিযোগ অনেক পুরনো। শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে চলাচলকারী নৌ-যান থেকে প্রতিদিনই আদায় করা হয় চাঁদা। নৌ পথে বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের নামে বেনামে বিভিন্ন কৌশলে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে নৌ-যান থেকে অতিরিক্ত হারে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে একটি চক্র।
চাঁদা না দিলে নৌযান শ্রমিক ও মালিকদের নির্যাতন করারও অভিযোগ রয়েছে। এই নৌপথে প্রতি নৌকা, বাল্কহেড নৌকা থেকে অতিরিক্ত ৩-৪ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। যাতে করে এ নৌপথ দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌ-নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নৌ-পুলিশ এবং চলাচলকারী নৌযানের ট্রাফিক ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে বালুবাহী বাল্কহেডগুলো থেকে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। নদীটির কয়েকটি পয়েন্টে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা নিজেরাই এবং নৌ-পুলিশের নামে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি বাহিনী ট্রলার নিয়ে প্রতিদিনই চাঁদা তুলছে। আর দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দিলে মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাল্কহেডগুলোর শ্রমিকরা।
একাধিক বাল্কহেড চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাবুলাল বৈদ্য তার নিজস্ব লোককে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে পাঠিয়ে নৌকা আটকায় এবং তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে চাঁদাবাজরা রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। পুলিশের অভিযানে মাঝে মধ্যে চাঁদা আদায়কারীদের আটক করা হলেও অদৃশ্য কারণে নেপথ্যের মূলহোতারা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-নিট্রা বিভাগের সহকারী পরিচালক বাবুলাল বৈদ্য’র নৌ-পুলিশের যোগসাজেসে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, শীতলক্ষ্যার নৌপথে চলাচলকারী ৪ থেকে ৫ হাজার কাগজপত্রহীন, মেয়াদ উত্তীর্ণ অবৈধ বাল্কহেডপ্রতি মাসিক হারে তিন থেকে চার হাজার টাকা মাশোহারা নিয়ে থাকেন তিনি। তাকে চাঁদা না দিলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেন তিনি। তাকে মাশোহারা দিলেই কোনো প্রকার বাধাহীন নৌপথ ব্যবহার করে যথারীতি চলাচল করছে কাগজপত্রহীন অবৈধ বালুবাহী নৌকা, বাল্কহেড গুলো। এতে করে ব্যক্তিগত ভাবে বাবুলাল বৈদ্য লাভবান হলেও বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সরকার।
এছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ থেকে একাধিক বার বদলী হওয়া সত্বেও কোনো এক অদৃশ্য ফায়দার টানে বার বার এখানেই বদলী হয়ে আসছেন বাবু লাল বৈদ্য। অব্যাহত চাঁদাবাজির কারণে চরম হতাশায় ভুগছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা। এবিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-নিট্রা বিভাগের সহকারী পরিচালক বাবুলাল বৈদ্য’র এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।