৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার | দুপুর ২:৪৪ মিনিট
ঋতু : শীতকাল | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

শিরোনাম :
হিজবুল্লাহর আরেক নেতাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণের হদিস নেই ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা নির্ধারণ চেয়ে আইনি নোটিশ সিটি করপোরেশন পরিচালনায় কমিটি, কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকবেন যিনি কর্মীদের উদ্দেশে শিবির সেক্রেটারির জরুরি বার্তা ‘শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে, আইন ভাঙলে ব্যবস্থা’ রেমিট্যান্স নিয়ে আবারও সুখবর চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনা বাহিনীর হাতে সোনারগাঁও উপজেলা  বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আতাউর গ্রেপ্তার বন্দরে পরিবেশ দূষণের দায়ে ব্যাটারী কারখানা বন্ধের নোটিশ সড়ক যেন অপরাধীদের কবলে ! এ যেন মরন ফাঁদ!!  মদনপুর -মদনগঞ্জ সড়ক|| পুলিশী টহল বৃদ্ধির আশ্বাস ওসির… সাবেক এমপি শামীম ওসমানের স্নেহভাজনআলীর বিএনপি নেতা হওয়ার খায়েশ পূর্বাচলের অস্ত্র উদ্ধার মামলা৭ বছরেও অস্ত্রের উৎস মেলেনি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মধুপুরের আনারস মিরপুরে নয় কানপুরেই শেষ সাকিবের ক্যারিয়ার! অভিনেতা আলাউদ্দিন লাল মারা গেছেন পঞ্চগড়ে কুকুরের কামড়ে নার্সসহ আহত ১৪ দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচন কখন হবে সেটা রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত : জয়নুল ফারুক স্কুলে ভর্তিতে এ বছরও থাকছে লটারি শাসন পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে : জিএম কাদের

না’গঞ্জে যেন করোনার ভয় নেই!

ncitynews24.com
প্রকাশিত: শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১ | আপডেট: শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১

না’গঞ্জে যেন করোনার ভয় নেই!
  দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যেমন বাড়ছে তেমনই মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সেই তুলনায় পিছিয়ে নেই নারায়ণগঞ্জ বরং দেশের সকল জেলার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে সর্বত্র ঢিলেঢালা ভাবে চলছে। সেই সাথে শহর ও আশেপাশের এলাকায় মানুষের চলাচল থেকে শুরু করে যানবাহনের আধিক্য দেখে মনে হয়না নারায়ণগঞ্জ করোনার হটস্পট। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই নারায়ণগঞ্জে শ’ শ’ করে বেড়ে যায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে সংক্রমণের শুরুতে মানুষের মধ্যে যে আতংক ছিল এখন আর সেই আতংক নেই। সেই সাথে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতারও কোনো বালাই দেখা যাচ্ছে না। গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ভ্রাম্যমান খাবার দোকানে ভীড় ও আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন অনেকে। মনে হয় তাদের মাঝে করোনার বালাই নেই। নেই কোন আতঙ্ক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে চট্টগ্রামে সন্ধ্যায় দোকানপাট বন্ধসহ অহেতুক বাইরে লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে এর কোন উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি। নারায়ণগঞ্জের সচেতন মানুষের দাবি করোনা মোকাবেলা করতে হলে নারায়ণগঞ্জে রাত ৮র মধ্যে সকল দোকানপাটা বন্ধসহ শহরে অহেতুক লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে। গতকাল শুক্রবার নবীগঞ্জ খেয়াঘাটে বিকেলে দেখা যায়, যেন মেলা বসেছে। মানুষ নদীরপাড়ে বসে যেভাবে আড্ডা দিচ্ছে এবং তাতে করোনা ছড়াতে বেশী সময় নেবে না। যারা বসে আছে তাদের কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। তবে নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনকে অনেক কঠোর হতে হবে বলে সচেতন মহল দাবি করেন। জানা যায়, গত বছরের ৮মার্চ রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন শনাক্ত করে। তিনজনের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। আক্রান্ত দুইজন একই পরিবারের। তারা ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের মাধ্যমে অপরজন আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর থেকেই নারায়ণগঞ্জের সংক্রমণ শুরু হয়। কিন্তু এই সংক্রমণের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে সচেতনতা কমে গেছে। এখন আর হ্যান্ড স্যানিটাইজারের তেমন একটা ব্যবহার হচ্ছে না। মাস্কের ব্যবহার কমে গেছে। মাস্ক ছাড়াই ইচ্ছেমতো শহরজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ। এর আগে গত বছরের ২৯ মার্চ শিউলী ওরফে পুতুল নামে ৪৫ বছর বয়সী ওই নারীর প্রচন্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেল সেখানকার ডাক্তার তাকে ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু সেটা না করে বন্দরে তার বাসায় নিয়ে আসে। পরদিন গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শিউলী ওরফে পুতুল নামে ওই নারীর মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা শেষে তার করোনার পজেটিভ ধরা পড়ে। এ ঘটনা জানার পর রাতেই প্রশাসন ও পুলিশ সেখানে উপস্থিত হন। রাতেই বন্দরের রসুলবাগ এলাকার জামাল সোপ কারখানা থেকে রসুলবাগ মোড় পর্যন্ত সড়কটি লকডাউন করে দেয় হয়। নিহত নারীকে দাফনের আগে গোসল করানো নারীর বাসাও লকডাউন করে প্রশাসন। এছাড়া চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয় সহ ৭জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। গত বছরের ঢেউ সামাল দিলেও এ বছর তার চেয়ে দ্রুত সংক্রমনের হার বাড়তে থাকলেও এখনো প্রশাসন শক্ত কোন উদ্যোগ নেয়নি। এখন শুধু প্রচার প্রচারনায়ই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কিছু স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতে মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। তার পরেও মাস্ক পরার প্রবনাতা মানুষের মধ্যে কম দেখা যায়। তবে সব চেয়ে বেশী ঝুঁকিপূর্ন স্থানের মধ্যে সেন্ট্রাল খেয়াঘাট। নদী পাড়াপারে নৌকার মাঝিরা জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা না করেই শুধু নিজেদের আর্থিক ফায়দা হাসিলের জন্য নৌকায় গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করছে। তাদের কেহ প্রতিবাদ করলেও তারা এর কোন তোয়াক্কাই করছে না। এখন শহরের প্রত্যেকটি মার্কেটেই মানুষের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা যায়। মানুষজন প্রয়োজনে অপ্রয়োজনেই এসেই মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন। সেই সাথে মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে একে অপরের সাথে ঘেঁসেই তারা তাদের পণ্য সামগ্রী ক্রয় করেছেন। সেই সাথে ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের নিয়েই অবাধে মার্কেটে প্রবেশ করেছেন। আর এ ব্যাপারে মার্কেট কর্তৃপক্ষও যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জে ১০ হাজারের অধিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছেন প্রায় ১শ’ ৭৫ জন। তার পরেও মানুষের মধ্যে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবনতাই বেশী দেখা যায়। প্রশাসন বিভিন্ন পার্ক বন্ধ করে দিলেও মানুষ পার্কে ঢুকে অবাধে চলাচল করছে। মনে হয় কারো মধ্যে করোনার ভয়ভীতি নেই। শহরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলায় স্বাস্থ্য বিষেজ্ঞরা যেমন সবাইকে সতর্ক থাকতে বলছেন তেমনই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিজে ও নিজের পরিবারের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানালেও নারায়ণগঞ্জে অধিকাংশ মানুষ এসবের তোয়াক্কা করছে না।