মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে অন্তত সাত আন্দোলনকারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে চলা বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও দেশটির চিকিৎসক ও রাজনীতিক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার পর থেকে গত চার সপ্তাহ ধরে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে যাচ্ছে মিয়ানমারের জনগণ। টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এ প্রতিবাদ দমাতে শনিবার থেকে কঠোর অবস্থানে যায় দেশটির সামরিক জান্তা। রোববার মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেও ব্যর্থতার পর পুলিশ গুলি চালায়। একইদিনে ডাউই শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে ঘটনাস্থলে একজন নিহত এবং কমপক্ষে আরও ২০ জন আহত হয়েছেন। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়েও একজন নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এখানেও সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। মধ্যাঞ্চলীয় শহর বাগোতে পুলিশের দমনাভিযানের মধ্যে অন্তত দুই জন নিহত হয়েছেন বলে একটি দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে। উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর লাশিও এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মায়িকেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী। তারা পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে। এদিন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সেনাবাহিনী সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। জরুরি অবস্থার মধ্যেই জান্তা শাসন বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির জনগণ।