রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কমপ্লেক্সের একটি ঘরে আটক থাকা যুবকের লাশ পাওয়া গেছে। রোববার (২৯ নভেম্বর) ভোরে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লাশটি ঝুলতে দেখেন দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ। তাকে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
নিহত যুবকের নাম মোফাজ্জল হোসেন (২৬)। তিনি পেশায় দিনমজুর ছিলেন। হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামে ১২ দিন আগে বিয়ে করেন তিনি। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে দেওয়া হয়। তার শ্বশুরের নাম রফিকুল ইসলাম। মোফাজ্জলের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের যুগলপুর গ্রামে। তার বাবার নাম তোফাজ্জল হোসেন। মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল। মোফাজ্জলের শ্বশুরসহ তার পরিবারের সদস্যরাও পালিয়ে গেছেন। তবে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চেয়ারম্যান মুঞ্জিলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তখন ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জিল জানান, কয়েকদিন বিয়ে হলেও রফিকুলের মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। তিনি আর সংসার করতে চাচ্ছিলেন না। দুইদিন আগে মোফাজ্জল তাকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। শনিবার মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন মোফাজ্জলকে ইউনিয়ন পরিষদে রেখে যান। রোববার দুইপক্ষের লোকজনের মিমাংসায় বসার কথা ছিলো। এজন্য রাতে মোফাজ্জলকে ইউপি ভবনের একটি কক্ষে রাখা হয়। ভোররাতে দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ জানালা দিয়ে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হয়। তবে নিহতের চাচাত ভাই উজ্জ্বল আলীর অভিযোগ, মোফাজ্জলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মোফাজ্জল ও তার স্ত্রীর কলহ নিয়ে শনিবারও তারা ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলেন। তখন চেয়ারম্যান বলেছিলেন, দেনমোহরের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ভরণপোষণের আরও ১০ হাজার টাকা দিয়ে মোফাজ্জলকে নিয়ে যেতে হবে। রোববারের মধ্যে টাকা না দিলে মোফাজ্জলকে মাদকদ্রব্য দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজশাহীর দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, লাশের সুরতহালের সময় শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাত দেখা যায়নি। তবে তাকে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনেরা। তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওসি আরও বলেন, এটি ‘হত্যা’ নাকি ‘আত্মহত্যা’ তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা যাবে। তবে চেয়ারম্যানকে দেখা যাচ্ছে না। নিহত মোফাজ্জলের শ্বশুরবাড়ির লোকজনও পলাতক। কারও বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।