জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অনাহুত বিতর্কের সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শনিবার সকালে সংসদ ভবনস্থ তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের সংস্কৃতির প্রতি চ্যালেঞ্জ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না, জনগণের শান্তি বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টায় জনগণই রুখে দাঁড়াবে। দেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান এবং রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বক্তব্য বরদাশত করা হবে না।’ যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে,বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, তাদের সকলকে এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার প্রধান আগেই বলেছেন, দেশে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন হবে না। তাই অন্য কোন পথ নাপেয়ে ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হচ্ছে, যা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেশে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা, চর্চা এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে মাদ্রাসা বোর্ড পুনর্গঠনসহ ইসলাম প্রচারে তাবলিগ জামাতকে জমি প্রদান করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পবিত্র ধর্মের একজন নিবেদিত প্রাণ ও অনুসারি হিসেবে ইসলামের সাথে জ্ঞানবিজ্ঞানের সমন্বয় করে প্রকৃত ইসলামের চর্চা এগিয়ে নিতে জনমানুষের ধর্মানুরাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশের প্রতিটি উপজেলায় নির্মাণ করেছেন মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স। ওবায়দুল কাদের বলেন, একজন ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্বে তখন এদেশে ইসলাম বিরোধী কোন কার্যক্রম হবে, তা বিশ্বাস করার কোন কারন নেই। তিনি বলেন, ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলে অপপ্রচারে নেমেছে তারা নিজেরাই ভ্রান্তিতে আছে, দেশের আলেম সমাজ এবং বিশেষজ্ঞগণ ইতিমধ্যেই বারবার বলেছেন মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ইসলাম আমাদের ধর্ম,এ ধর্মের বিধিবিধানে ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক করতে,নিষেধ করা হয়েছে ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিতে। বাংলাদেশের স্থপতির ভাস্কর্য টেনে হেঁচড়ে নামাবে বলে কোন কোন ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন, তাদের এমন রুচি এবং ভাষা ব্যবহার দেখে তাদের ধর্মচর্চা ও ইসলামি রুচিবোধ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। প্রকৃত ইসলাম চর্চার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে সবাই বিরত থাকি। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করি।