অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ কার্যকর। একটি বিশাল আকারের ট্রায়াল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে ইতোমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারা গিলবার্ট বলেন, ‘কোভিড-১৯ যে বিপর্যয় ডেকে এনেছে, তার অবসানের জন্য এই টিকা ব্যবহারের পথে আমরা আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।’
ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলে দেখা গেছে, ফাইজার-বায়োএনটেক, রাশয়ার স্পুটনিক এবং মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৯০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে একটি অর্থাৎ ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনটি ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশ কার্যকর বলে জানানো হয়েছে। সেই হিসেবে অক্সফোর্ডের কার্যকারিতা অন্যসব ভ্যাকসিনের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। তবে অন্যান্য ভ্যাকসিনের চেয়ে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের দাম অনেকটাই সস্তা হবে এবং এটি বিশ্বের যে কোনো স্থানে সংরক্ষণ করাও বেশ সহজ। তাই এদিক দিয়ে বলা যায়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে তেমন একটা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে মহামারি নিয়ন্ত্রণে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তা ছাড়া সঠিকভাবে এই ভ্যাকসিনের ডোজ প্রদান করা গেলে তা শরীরে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম বলেও জানানো হয়েছে। এর মধ্যেই ভ্যাকসিনের ১০ কোটি ডোজ তৈরির জন্য অক্সফোর্ডকে পূর্ব-নির্দেশনা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, আমরা হয়তো আগামী গ্রীষ্মের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবন-যাত্রার অনেকটা কাছাকাছি চলে যেতে পারব। ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের একে অপরকে দেখে রাখতে হবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি মহামারি করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করছে। এতে করে এই আশা তৈরি হয়েছে যে, করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এসব মানুষ হয়তো এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সুরক্ষা পাবেন। গবেষকরা বলছেন, বিখ্যাত ব্রিটিশ চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল ল্যানচেটে প্রকাশিত দ্বিতীয় দফার ফলাফলে ভ্যাকসিনটির ডোজ নেয়া ৫৬০ সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীর এ সংক্রান্ত যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা ‘আশা জাগানিয়া’। এ ছাড়া এই ভ্যাকসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই বলে ল্যানচেটে পিয়ার রিভিউ হওয়া ফলাফলে জানানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যে ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিনের ৪০ লাখ ডোজ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে আরও ৯ কোটি ৬০ লাখ ডোজ। যুক্তরাজ্যে ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ৩০ জনকে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ প্রদান করা হয়েছে।