নব্য জেএমবি’র মিডিয়া শাখার প্রধানসহ চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র, গুলি, জিহাদি বই ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে শিবগঞ্জ থানার চন্ডিহারা বাজারের পাশে খোলা মাঠে বৈঠক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বগুড়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল বাতেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নব্য জেএমবি’র মিডিয়া শাখার প্রধান দায়িত্বশীল জাকারিয়া জামিল (৩১), আইটি শাখার সদস্য তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), সক্রিয় সদস্য আতিকুর রহমান (২৮) ও আবু সাঈদ (৩২)। ডিআইজি বাতেন বলেন, তানভীর ও জামিল ঢাকার আশুলিয়ায় জঙ্গি হামলার পলাতক আসামি। পুলিশ তাদের খুঁজছিল। উন্নত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই দুজনের অবস্থান বগুড়ায় বুঝতে পেরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল চন্ডিহারা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, খোলা মাঠে বসে পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণের বৈঠক করছিল গ্রেপ্তারকৃতরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি পিস্তলের ম্যাগজিন, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ১টি দেশী ওয়ান শুটার গান, ২টি কার্তুজ, ৩টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু, ২টি চাপাতি, ১ কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য, ২টি লাল স্কচটেপ, ৪টি ব্যাটারি, কিছু তার ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, নব্য জেএমবি’র মিডিয়া শাখার প্রধান জাকারিয়া জামিল জঙ্গি সংক্রান্ত অনলাইনে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করতেন। তানভীর আহম্মেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের ছাত্র। এ বছরের শুরুতে ঢাকার আশুলিয়ায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ড্রোন তৈরির মাধ্যমে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন তানভীর। এছাড়া আতিকুর রহমান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। তিনি নতুন সদস্য এবং অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ তিনি যুদ্ধ করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক দিয়ে ৫০টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা বানানো সম্ভব বলেও জানান ডিআইজি আবদুল বাতেন। ব্রিফিংয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হায়দার আলী, আবদুর রশিদ ও সনাতন চক্রবর্তী, বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর, ডিবির ওসি আবদুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।