ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে আইনানুযায়ী আজকের মধ্যেই (মঙ্গলবার) কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে। আজ মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ইরফান সেলিমের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, যে কাউন্সিলরের কথা জানতে চাচ্ছেন, সেই অভিযোগটি আমাদের নথিভুক্ত হয়েছে। আমরা প্রসেস করছি। সম্ভবত আইন অনুযায়ী তাকে আজকেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করব। তিনি বলেন, তাকে বরখাস্ত করার পর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে। আমরা বলতে পারি আপনারা বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রজ্ঞাপনটা দিয়ে দেবেন- এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এক্সাক্টলি’। অনেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ আসে, তারা এক ধরনের মাস্তানিই করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ আছে কিনা- জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমি কোনো শ্রেণি পেশা বা পদ-পদবিকে ভিন্নভাবে বিবেচনা করব না। আমার মনে হয় বাংলাদেশে সকল পেশা সকল পদের লোকজনের মধ্যে ভালো-মন্দের দুই কাজের মিশ্রণ প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ্য করি। সব কাউন্সিলর খারাপ কাজ করেন, এটা আমি মনে করি না। কিছু কিছু কাউন্সিলর দৃষ্টিকটু, অনিয়ম এবং অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজের সঙ্গে কেউ কেউ কখনও কখনও সম্পৃক্ত হয়নি এটা বলা যাবে না। যেটা হয়েছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কাউন্সিলর ইরফানের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত আমলে নেয়া হবে বলেও জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের পুত্র এবং নোয়াখালীর সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর জামাতা। গত রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে এমপি হাজী মো. সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও সোমবার ভোরে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সোমবার দুপুরে ইরফানকে গ্রেফতার করে র্যাব। পুরান ঢাকার তার বাসায় অভিযানও পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৩৮টি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ভিপিএস সেট, গুলিসহ একটি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ড্রোন এবং সাত বোতল বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করা হয়। বাসায় বিদেশি মদ ও অনুমোদনহীন ওয়াকিটকি রাখায় কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছর করে জেল দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাতেই তাদের কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।