৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার | রাত ৪:০৭ মিনিট
ঋতু : শীতকাল | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

শিরোনাম :
হিজবুল্লাহর আরেক নেতাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণের হদিস নেই ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা নির্ধারণ চেয়ে আইনি নোটিশ সিটি করপোরেশন পরিচালনায় কমিটি, কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকবেন যিনি কর্মীদের উদ্দেশে শিবির সেক্রেটারির জরুরি বার্তা ‘শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে, আইন ভাঙলে ব্যবস্থা’ রেমিট্যান্স নিয়ে আবারও সুখবর চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনা বাহিনীর হাতে সোনারগাঁও উপজেলা  বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আতাউর গ্রেপ্তার বন্দরে পরিবেশ দূষণের দায়ে ব্যাটারী কারখানা বন্ধের নোটিশ সড়ক যেন অপরাধীদের কবলে ! এ যেন মরন ফাঁদ!!  মদনপুর -মদনগঞ্জ সড়ক|| পুলিশী টহল বৃদ্ধির আশ্বাস ওসির… সাবেক এমপি শামীম ওসমানের স্নেহভাজনআলীর বিএনপি নেতা হওয়ার খায়েশ পূর্বাচলের অস্ত্র উদ্ধার মামলা৭ বছরেও অস্ত্রের উৎস মেলেনি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মধুপুরের আনারস মিরপুরে নয় কানপুরেই শেষ সাকিবের ক্যারিয়ার! অভিনেতা আলাউদ্দিন লাল মারা গেছেন পঞ্চগড়ে কুকুরের কামড়ে নার্সসহ আহত ১৪ দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচন কখন হবে সেটা রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত : জয়নুল ফারুক স্কুলে ভর্তিতে এ বছরও থাকছে লটারি শাসন পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে : জিএম কাদের

৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

ncitynews24.com
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪ | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফসল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুধু গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নয় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ও এনে দিয়েছে।   বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিনি এ কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিশ্বে স্বাধীনতার জন্য এ যাবৎ যারা ভাষণ দিয়েছেন, তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ ৭ মার্চের ভাষণ। আর ৭ মার্চের ভাষণ শুধু বাঙালিকে উদ্বুদ্ধই করেনি বিজয় এনে দিয়েছে। ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্য।বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার নামটা মুছে ফেলা হয়েছিল। কোনো ছবি দেখানো যেত না। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিষিদ্ধ। যে স্লোগান দিয়ে লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছে, তার সব নিষিদ্ধ।তিনি বলেন, এমনকি ইতিহাস লিখতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম আসবে…একটা বইয়ে অনেক ছবি। আমার এখনও মনে আছে। তার মাঝখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি। সেটা একটা কাগজ দিয়ে ঢেকে আঙুল দিয়ে চেপে ধরে দেখানো হচ্ছে টেলিভিশনে, কিন্তু ওই ছবিটা দেখানো যাবে না। নিষিদ্ধ করা হয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে একটি গোষ্ঠী চেয়েছিল এদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে। তারা ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে এবং ‘জয় বাংলা’ শ্লোাগানও নিষিদ্ধ করে। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম মুছে দিতে উদ্যত হয়। কিন্তু ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না। তারই প্রমাণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি। শুধু তাই নয়, ইউনেস্কো মনে করে এ ভাষণটির মাধ্যমে জাতির পিতাই প্রকারান্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে যেভাবে হত্যা করা হলো। পাকিস্তানিরা বলতো বাংলাদেশ স্বাধীন হলে কিছু করতে পারবে না। বাংলাদেশ তাদের কাছে বোঝা ছিল, স্বাধীন হয়ে ভালই হয়েছে- এ ধরনের কথা তারা বলেছে। কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র ৩ বছর ৭ মাসের মধ্যে একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে যখন বঙ্গবন্ধু স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করলেন। এরপর যখন দেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেটাই স্বাধীনতাবিরোধীদের সহ্য হয়নি। দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, পাকিস্তানিরা তাকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু যারা আমাদের দেশের, যারা দিনরাত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত, তাদেরই দেখলাম ঘাতকরূপে।১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ভাষণে তিনি বাঙালির দীর্ঘদিনের লালিত স্বাধীনতা অর্জনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে ৬৯ সালের অক্টোবর মাসে আমার বাবার লন্ডনে গিয়েছিল। তিনি (বঙ্গবন্ধু) মুক্তি পাওয়ার পর পর আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ইতালিতে চলে যাই। ইতালি থেকে আমার স্বামী আবার লন্ডনে চাকরি পেয়েছিল, সেখানে চলে যাই। সেখানে বসে তিনি তার যে পরিকল্পনা ছিল, নির্বাচন হবে, নির্বাচনের রেজাল্ট আসবে, ওরা ক্ষমতা দেবে না, আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধের প্রস্তুতিটা আমি একজন সাক্ষী এখনো আছি, তিনি পরিকল্পনা করেন। ভারতের দুজন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করেন। আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হবে, সেখানে শরণার্থী গেলে কীভাবে আশ্রয় হবে, প্রবাসী বাঙালিরা কি কি কাজ করবে, সমস্ত পরিকল্পনা তিনি করে আসেন।

পাক্স্তিানিরা নাজমুল হকের (মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মেজর পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন) কাছে জিজ্ঞেস করেছে— ৭ মার্চের ভাষণের শেখ মুজিব কি কথা বলেছিল? সেটার ব্যাখ্যা চেয়েছিল। ৭ মার্চের ব্যাখ্যা খুঁজতে খুঁজতেই তাদের (পাকিস্তানি) সময় গেছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কী বলে গেলেন? কী হয়ে গেল? বাংলাদেশের মানুষ অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলো। এটাই ছিল তাদের (পাকিস্তানি) বক্তব্য। একজন নেতার ভাষণ মানুষকে শুধু উদ্বুদ্ধ করেনি, গেরিলা যুদ্ধের শুধু প্রস্তুতি দেয়নি, একটা যুদ্ধের বিজয় এনে দিয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, মার্শাল ল’য়ের মধ্যেও নির্বাচন দেওয়ার ওয়াদা করেছিল ইয়াহিয়া খান। ওয়াদার মধ্যেও কিছু শর্ত ছিল। আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যক্তি এ নির্বাচনে বিরোধিতা করেছিল। সেই শর্ত মেনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার (বঙ্গবন্ধু)  কথা ছিল, কে এদেশের নেতৃত্ব দেবে এটা আগে জনগণ ঠিক করুক।বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকামী লাখো জনতার উদ্দেশে দেওয়া তার কালজয়ী ভাষণে বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধকালে বজ্রকণ্ঠের এই ভাষণ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বমানচিত্রে স্থান করে নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।  এ ভাষণ বাঙালিকে শুধু উদ্বুদ্ধই করেনি বিজয় এনে দিয়েছে বলে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে তিনি আমাদের ‘স্বাধীনতা’ নামের এক অমরবাণী শুনান এবং সংগ্রামের মাধ্যমে শৃঙ্খলমুক্তির পথ দেখান। তিনি বীর বাঙালির অবশ্যম্ভাবী বিজয়কে উৎকীর্ণ করেন তাঁর ভাষণের শেষ দু’টি শব্দে- ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ।