সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ওপারে যাচ্ছে ইলিশসহ বাংলাদেশি পণ্য। আর ভারত থেকে এপারে আসছে বিভিন্ন মাদকসহ কয়লা, চিনি ও পিয়াজ। গত বুধবার দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ওপারে পাচারের সময় ২৭৫ কেজি ইলিশের বড় একটি চালান জব্দ করে বিজিবি। যার বাজারমূল্য সাড়ে ৫ লাখ টাকা। গত ১৬ দিনে ভারতে পাচারের সময় বড় তিনটি ইলিশের চালান জব্দ করে বিজিবি। গত ২৫শে আগস্ট এ সীমান্তের মাটিরাবন এবং ৩১শে আগস্ট তাহিরপুর সীমান্তের লাউড়েরগড় শাহিদাবাদ দিয়ে পাচারের সময় ৪৬ কেজি ইলিশ জব্দ করে বিজিবি। এদিকে বৃহস্পতিবার দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচারের সময় বিপুল পরিমাণ সুপারি, রসুন ও দেশীয় মাছ, ১টি ট্রাক, ২টি ডিআই ও ৪টি মাহেন্দ্রা পিকআপ সহ ২ কোটি ১১ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করে বিজিবি। বাংলাবাজার বিওপি’র একটি টহলদল অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কুশিয়ারা নামক স্থান থেকে এসব মালামাল জব্দ করে।
জানা যায়, প্রায় দেড় মাস ধরে প্রতিদিনেই মণে মণে ইলিশ ভারতে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কিছু ধরা পড়লেও বেশির ভাগই চলে যায়। এক লাখ টাকার ইলিশ ভারতে পাচার করতে পারলেই দুই লাখ টাকায় বিক্রি হয়। বেশি লাভের আসায় চোরাচালানীরা এখন ইলিশের ব্যবসা শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জ সীমান্তের ছাতক, দোয়ারা বাজার, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর, মধ্যনগর উপজেলার বিভিন্ন স্পট দিয়ে অবাধে ভারতীয় চিনি, পিয়াজ, কয়লাসহ বিভিন্ন মাদক ঢুকছে এদেশে (বাংলাদেশে)। সীমান্তে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব বিষয়ে বর্তমানে নীরবেই বলা চলে। দোয়ারাবাজার সীমান্তের কয়েকজন জানান, গত দেড় মাস ধরে প্রতিদিন ৫০-৬০ কার্টন ইলিশ মাছ ওপারের ঢালিয়া বস্তিতে যাচ্ছে। এসব মাছ সিলেট, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ থেকে লেগুনায় করে, ছোট ছোট পিকআপ দিয়ে বাংলাবাজারের আশপাশে এনে গোপনে রাখে। রাত দেড়টা-দুইটার পর এগুলো ওপারে পাঠায়। সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল একে এম জাকারিয়া বলেন, যেহেতু গত ১৫ দিনে তিনটি ইলিশের চালান আটক হয়েছে তাহলে ধরে নিতে হবে, এই সীমান্ত দিয়ে ইলিশের আনাগোনা বেড়েছে। সীমান্ত এলাকায় এখন কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। এ সীমান্তের ১৯টি বিজিবি ফাঁড়িকেই এ বিষয়ে সতর্ক রাখা হয়েছে।