রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন বিশ্বের মধ্যে তাদের তৈরি করা ‘প্রথম করোনা ভাইরাসের টিকা’ রোগ প্রতিরোধে সাড়া দিয়েছে। যেসব অংশগ্রহণকারীর ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনোই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানচেটে তাদের এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আগস্টে স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের জন্য করোনা ভাইরাসের টিকা অনুমোদন বা লাইসেন্স দেয় রাশিয়া। স্পুটনিক যুগের সঙ্গে তুলনা করে এই টিকার নাম রাখা হয় ‘স্পুটনিক-ভি’। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা উৎপাদনে তারাই প্রথম বলে দাবি করে।
একই সঙ্গে এই টিকা স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়। প্রথমেই এই টিকা প্রয়োগ করা হয় প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের এক মেয়ের ওপর। কিন্তু সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এখনও রাশিয়ার এই টিকার অনুমোদন দেন নি। কারণ, এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে সামান্যই পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এর সামান্যই বিশ্ব সম্প্রদায়কে জানানো হয়েছে। ফলে রাশিয়ার এত দ্রæত টিকা আবিষ্কার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেক পশ্চিমা বিশেষজ্ঞ। কিন্তু সমালোচকদের জবাবে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছে মস্কো। গত মাসে এই টিকার ব্যাপক প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনিই ঘোষণা দিয়েছেন যে, তার এক মেয়ের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে এই টিকা।
দ্য ল্যানচেট বলছে, জুন ও জুলাই মাসে স্পুটনিক-ভি এর দু’দফা পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবককে বেছে নেয়া হয়। তাদেরকে দেয়া হয় এই টিকা। এর তিন সপ্তাহ পরে তাদেরকে দেয়া হয় একটি করে বুস্টার ভ্যাক্সিন। এসব স্বেচ্ছাসেবকের বয়স ১৯ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তাদের ওপর টিকা প্রয়োগ করার পর ৪২ দিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের সবার শরীরে এন্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কমন যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা এবং জয়েন্টে ব্যথা। তবে দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপদ ও কার্যকারিতার জন্য আরো পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করা হয়। এই টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালানো হবে ৪০ হাজার মানুষের ওপর। তাদের বয়স হবে বিভিন্ন। সাধারণ ঠান্ডা সৃষ্টিকারী এডেনোভাইরাসথেকে তৈরি করা হয়েছে রাশিয়ান এই টিকা।