যারা চরমভাবে ঘৃণা করেন, সাকিব আল হাসানের অবসর ঘোষণা হয়তো তাদের চোখেও জল! কারণ তিনি যে দেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়। বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটারদের যে বিশ্বমঞ্চে দাপট দেখাতে পারেন, তা সর্বপ্রথম করে দেখিয়েছেন তিনি।
তবে শেষটা যে হতাশা! যে ক্রিকেটার গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছেন এ দেশকে, দেশের ক্রিকেটকে। সেই সাকিব নিরাপত্তা চান, দেশের মাটিতে বিদায়ী টেস্ট খেলতে। একটা ক্রিকেটারের কাছে এরচেয়ে বড় আক্ষেপ আর কি বা হতে পারে!
কেবল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সাকিবকে পড়তে হয়েছে নিরাপত্তাহীনতায়। হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় শঙ্কা জেগেছে, দেশে ফিরলে হতে পারেন গ্রেপ্তার।
চট্টগ্রামে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু সাকিব, শেষটা করতে চান মিরপুরে। কানপুরে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলেছেন, ‘যেটা মনে হয়েছে, সামনের হোম সিরিজ আমার শেষ সিরিজ হবে। এভাবে ফারুক ভাই (বিসিবি সভাপতি) ও নির্বাচকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মিরপুর টেস্ট (অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) হবে আমার শেষ টেস্ট। বিশেষ করে টেস্টে।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেননি সাকিব। সে সময় কানাডায় টি-টোয়েন্টি লিগ খেলছিলেন তিনি। সেখান থেকে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে খেলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট।
সতীর্থরা দেশে ফিরলেও তিনি যান ইংল্যান্ডে। সেখানে থেকে দলের সঙ্গে যোগ দেন ভারতে। চেন্নাইয়ের পর এবার কানপুরে টেস্ট খেলার অপেক্ষায় সাকিব। সংসদ সদস্য হওয়ায় সরকার পতনের পর হন হত্যা মামলার আসামি। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকায় জরিমানা হয় ৫০ লাখ টাকা।
খুব কম ক্রিকেটাকে মাঠ থেকে বিদায় দিতে পেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দেশের সবচেয়ে সফল ও সেরা ক্রীড়াবিদের ক্ষেত্রেও কি এমনটা হবে? তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হত্যা মামলা হওয়ায় দেশে ফিরলে সম্ভাবনা রয়েছে গ্রেপ্তারের।
তাই তো নিরাপত্তার বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘বোর্ড চেষ্টা করছে এটা কীভাবে সুন্দর করে আয়োজন করতে পারে। দেশে যাতে নিরাপদে খেলতে পারি। দেশ থেকে যেন নিরাপদে বেরও হতে পারি।’
নিরাপত্তার আশ্বাস পেলে দেশে ফিরবেন, আর তা না হলে কানপুর টেস্টই হবে সাদা পোশাকের শেষ ম্যাচ, ‘কানপুর টেস্টের পর দেশের মাটিতে লাল বলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি দেখছেন। এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক ভাইয়ের (বিসিবি সভাপতি) সঙ্গে কথা হয়েছে। যদি দেশে আসার পরিস্থিতি আমার জন্য অনুকূলে থাকে আমি দেশে এসে সিরিজ খেলে বিদায় নিতে চাই। না হয় হয়তো এই কানপুরেই শেষ (হাসি)।’-কালবেলা