করোনাভাইরাস থেকে মুক্তিলাভের প্রার্থনায় সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন করছেন। ঘরে ঘরে বড়দিনের আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি গির্জাতে এসে তারা খ্রিস্টযোগে অংশ নিয়ে প্রার্থনা ও আনন্দ ভাগাভাগি করছেন। আজ শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) খ্রিস্টযোগে অংশ নিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণীর গির্জায় হাজির হন খ্রিস্টধর্মাবলম্বী কয়েকশ মানুষ। যতটা সম্ভব করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে প্রথম খ্রিস্টযোগ হয় সকাল ৭টায় এবং দ্বিতীয় খ্রিস্টযোগ শুরু হয় সকাল ৯টায়।
দ্বিতীয় খ্রিস্টযোগে ঢাকা মহা ধর্মপ্রদেশের নব অভিষিক্ত আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রজ ওএমআই বলেন, ‘সবাইকে প্রথমে বড়দিনের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছি। আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই, তার একমাত্র পুত্রকে (যিশু), আমাদের মুক্তিদাতা-ত্রাণকর্তাকে এ জাগতে পাঠিয়েছেন। তিনি (যিশু) দেহ ধারণ করে মানুষ হয়েছেন আমাদের মুক্তির জন্য। আর এই মুহূর্তে সারাবিশ্ব শঙ্কিত, ভীত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে। সেজন্য প্রার্থনা করি যাতে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি লাভ করে, বিশ্ব করোনাভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি লাভ করে। যাতে আবার আমরা সুখে-শান্তিতে একাত্মতার মধ্যে জীবনযাপন করতে পারি।’ খ্রিস্টযোগে ধর্মীয় সঙ্গীত, প্রার্থনা, শাস্ত্রপাঠ হয়। বড়দিনের প্রায় ঘণ্টাব্যাপীর এ প্রার্থনায় যারা আনন্দ ও মিলনে কাছে নেই এবং যারা গরিব-দুঃখী-অসুস্থ, তাদেরকে স্মরণ করা হয়। তাদের মঙ্গলে ও বিপদমুক্তি লাভের প্রার্থনাও করা হয়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বড়দিনের উৎসবকে মলিন করেছে করোনাভাইরাস। তাই জীবনদাতার কাছে প্রার্থনায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে এ থেকে মুক্তির বিষয়টি। প্রার্থনায় আরও বলা হয়, ‘করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারিতে আমাদের জগত প্রায় ধ্বংসের পথে। যিশু আমাদের জীবনদাতা, তিনি যেন এই ভাইরাসকে দূরীভূত করে জগতকে নতুন জীবনদান করেন। যারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে করোনায় আক্রান্ত, তারা যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। যারা মারা গেছেন, তারা যেন অনন্ত জীবন লাভ করেন। যারা স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, তারা যেন শক্তি ও সাহস পান। আসুন আমরা সেই উদ্দেশ্যে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি। সকলের জন্য প্রার্থনা করি- বড়দিনের উপহার শান্তি প্রেম ও পুনর্মিলন। সকলে যেন নতুন উদ্যম উৎসাহ ও আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করে আগামী বছরের প্রতিদিন আমাদের ব্যক্তি জীবন ও সমাজ জীবনে পালন করতে পারি।’