কার্গো হ্যান্ডেলিং চুক্তি থাকার পরও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে টার্কিশ এয়ারের কাছ থেকে আট বছরে ৩৬ কোটি টাকা হ্যান্ডেলিং চার্জ আদায় না করার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একজন প্রতিনিধি রয়েছেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিমান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রোকসিন্দা ফারহানা স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাগোনিউজ২৪.কম পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বিমানের ৩৬ কোটি টাকা ফাঁকি দিল টার্কিশ এয়ার’ শীর্ষক খবরের বিষয় তদন্তের জন্য যুগ্ম-সচিব (সিএ) জনেন্দ্র নাথ সরকারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি আগামী ৪ মার্চ সকাল ১০টায় বলাকা ভবন কুর্মিটোলায় কর্যক্রম শুরু করবে। তদন্ত কাজে একজন প্রতিনিধি পাঠানোসহ সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ প্রদানের অনুরোধ করা হলো।’
উল্লেখ্য, কার্গো হ্যান্ডেলিং চুক্তি থাকার পরও টার্কিশ এয়ারের কাছ থেকে আট বছরে ৩৬ কোটি টাকা হ্যান্ডেলিং চার্জ আদায় না করার অভিযোগ উঠেছে বিমান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে, যাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এ অর্থ আদায় হয়নি তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
চুক্তি অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ মাসের মধ্যে হ্যান্ডেলিং চার্জ বা বিল পরিশোধের কথা থাকলেও বিমানের কার্গো শাখার তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা অজ্ঞাত কারণে তা আমলে নেননি। চুক্তি ও নিয়ম-নীতি না মেনে ২০১০ সাল থেকে এ খাতে সেবা দিলেও চার্জ আদায় বন্ধ করে দেয়া হয়। কী কারণে চুক্তির শর্ত অমান্য করে টার্কিশ এয়ারকে এ অবৈধ সুবিধা দেয়া হয়েছিল তা-সহ খুটিনাটি বিষয়ে তদন্ত করবে কমিটি।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে টার্কিশ এয়ার থেকে আদায় করা হয়নি ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৮ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে এ অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৯ লাখ ৮৯ হাজার ১৫৮ মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে এ অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ১৯ হাজার ৫১৯ মার্কিন ডলার। ২০১৫ সালে আদায় করা হয়নি ৭ লাখ ৩৯ হাজার ২২৩ মার্কিন ডলার। ২০১৪ সালে আদায় হয়নি ৬ লাখ ২৯ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার। ২০১৩ সালে আদায় করা হয়নি ৫ লাখ ৩ হাজার ৬৮৮ মার্কিন ডলার। ২০১২ সালে আদায় করা হয়নি ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮১৫ মার্কিন ডলার। ২০১১ সালে আদায় করা হয়নি ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫৯ মার্কিন ডলার এবং ২০১০ সালে আদায় করা হয়নি ৪ হাজার ৪৬৮ মার্কিন ডলার। সবমিলিয়ে আট বছরে ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৫ মার্কিন ডলার আদায় করা হয়নি, যা টাকার অঙ্কে দাঁড়ায় ৩৬ কোটি ১৪ লাখ ৩৮০ টাকা।