বিএনপির কেন্দ্রীয় ফান্ডের ৩২ কোটি টাকার হিসাবের গরমিলের খবর পাওয়া গেছে। নানা বিতর্কে জর্জরিত দলটিতে এখন এই তহবিল তসরুফ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিরোধ। জানা গেছে, দলের দু:সময়ে সংগঠন পরিচালনার জন্য যখন টাকা প্রয়োজন, তখন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ৩২ কোটি টাকা নয়-ছয় হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কে, কখন, কীভাবে এই টাকা খরচ করেছে, সে সম্পর্কে কোনো কাগজপত্রও নেই।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি পরিচালনার জন্য যে অর্থ সংগ্রহ করা হয় তা কখনোই নিয়মনীতির মধ্যে ব্যয় করা হতো না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দলের মহাসচিবও কিছু অর্থ ব্যয় করতেন। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় দলীয় তহবিল পুরোটাই চলে যায় তারেক রহমানের দখলে। ওয়ান ইলেভেনের সময় তারেক গ্রেফতার হওয়ার পর দল অর্থ সংকটে পরে। প্যারোলে মুক্ত হয়ে তারেক লন্ডনে চলে গেলে বিএনপি তহবিল শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর বিএনপির টাকা-পয়সার কর্তৃত্ব পান আবদুল আউয়াল মিন্টু। এ সময় তিনি দলীয় ফান্ড ব্যবহারে হিসাব খাতা তৈরি করেন। যেখানে আয়-ব্যয় লেখা থাকতো। অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিচালনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিএনপির অধিকাংশ ব্যয়ই করা হয় নগদ টাকায়। আর এ কারণেই মিন্টু আয় ব্যয়ের একটি হিসাব খাতা খুলেছিলেন। কিন্তু ২০১৪-তে মিন্টু আত্মগোপনে গেলে দলের ব্যয় নির্বাহের দায়িত্ব পান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর আর দলের তহবিল বুঝে নেননি মিন্টু। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে ৬৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয় বলে দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে জানান। এখন দলের তহবিল পরিচালনার জন্য আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে দায়িত্ব দেয়া হয়। লন্ডন থেকে তারেক রহমানের এই নির্দেশ দেন। তাবিথকে তহবিল বুঝিয়ে দিতে গিয়েই দেখা যায় ৩২ কোটি টাকার হিসাব নেই। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল দাবি করেছেন, এই টাকা তারেক জিয়ার কাছে। অন্যদিকে তারেক বলেছেন, দলের ফান্ডের টাকা তার কাছে থাকার কোনো কারণ নেই।