ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও মৌলভীবাজার জেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনী জেলা। ফেনীর রামগর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফেনীর অধিকাংশ বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ। উপজেলাগুলোর পৌর শহরগুলোও এখন পানির নিচে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দ্রুত স্পিডবোট ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের আবেদন জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে সহযোগিতার জন্য সেখানে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড পৌঁছেছে।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে অনেকের মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর যোগাযোগ করতে পারছেন না। এজন্য জেলার বাইরে থাকা বিভিন্ন মানুষ তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এদিকে কিছু মোবাইল টাওয়ার বিকল্প উপায়ে চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে ফেনী থেকে ফাজিলপুর পর্যন্ত রেললাইন পানিতে ডুবে গেছে। এজন্য চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ফেনীতে রেললাইন ও রেলসেতুর ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই অবস্থায় ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। তাই আপাতত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’
পানি উন্নয়নের বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বড়ুয়া বলেন, ফেনীর রামগর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বিপৎসীমার ২১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে বন্যাকবলিত ৬ জেলার ৪৩ উপজেলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১ লাখ ৯০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ওই জেলাগুলো হলো-কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও মৌলভীবাজার।