অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। পাশাপাশি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটির এজাহারভুক্ত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত দুদকের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়। দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, আদালত প্রদীপ কুমার দাশের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। চিকিৎসা ও কারাগারে সাক্ষাতের বিষয়ে তার আইনজীবীর করা আবেদনে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসামির এজাহারভুক্ত সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করেছি, আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।’ এই মামলার আরেক আসামি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারণ পলাতক আছেন। রবিবার আদালতে জামিন শুনানি হলেও আসামি প্রদীপ কুমার দাশকে আদালতে আনা হয়নি। তিনি কক্সবাজার কারাগারে আছেন। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর দুদকের করা এই মামলায় শুনানি শেষে প্রদীপ দাশকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয় আদালত। ওই দিনই তার জামিনের আবেদন করা হলে আদালত ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রেখেছিলেন। উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে ওসি প্রদীপ এবং তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে গত ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই ঘটনার পর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে ১ নম্বর এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। মামলা হওয়ার পর ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর প্রদীপকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।