হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের সাইনবোর্ড ও সানাড়পাড় এলাকায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে হরতাল সমর্থদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৮ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও সানারপাড় এলাকায় পুলিশ হরতাল সমর্থকদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে হরতাল সমর্থকরা আইনশৃংখলাবাহিনীর উপর বৃষ্টির মত ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। আইনশৃংলাবাহিনীও পাল্টা টিয়ার শেল ও শট গানের গুলি ছুঁড়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
এ সময় সানাড়পাড় এলাকায় শাকিল (৩২) নামে ১ জন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয় বলে স্থানীয়রা জানান। গুলিবিদ্ধ শাকিলসহ গুরুতর আহত অবস্থায় শফিকুল (৫৩) নামে এ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিক্ষুব্দ হেফাজতের কর্মীরা দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে হেফাজত সমর্থকরা মহাসড়কের পাইনাদি এলাকায় ১০ তলা কুয়েতপ্লাজা ভবনের সামনে একটি বাস, একটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি ট্রাকে আগুন দেয়। যদিও এরআগে ফজর নামাজের পর তকে হেফাজতের কর্মীরা সড়কের অবস্থান নিয়ে শান্তিপুর্ণভাবে হরতাল কর্মসূচি পালন করছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এদিকে সরজমিনে দেখা গেছে, হরতালের সমর্থনে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ফজরের নামাজের পর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, মাদানী নগর মাদ্রাসার সামনে, পাইনাদি এলাকায় ১০ তলা কুয়েতপ্লাজা ভবন, শিমরাইল মোড়, শিমরাইল ইউটার্ণ, সোনারগায়ের কাঁচপুর-মুগড়াপাড়া, বন্দরের মদনপুর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় তাদের অনেকের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল।
বিক্ষুব্দ হেফাজতকর্মীরা সড়কের কয়েকটি স্থানে টায়ার, গাছের গুঁড়ি, বাঁশ, কাঠ, চৌকি, বেঞ্চসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রে আগুন জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। অনেকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে গন্তব্যে গিয়েছে।
এদিকে, বেলা ১১টার দিকে আইনশৃংখলা বাহিনী এ্যাকশনে যায়। এবং সড়ক থেকে হরতালকারীদের হটিয়ে দিতে যায়। এতে হেফাজতকর্মীরা আইনশৃংলাবাহিনীর উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ছুড়ে হরতালকারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বেলা ১২টার দিকে ধীরে ধীরে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করে।
ওদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে ভোর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি, চাষাঢ়া, সাইনবোর্ড, শিমরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও মোতায়েন ছিল বিজিবি ও র্যাব।