দেশে সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মন্ত্রী।তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দেশে চালের মজুত আছে প্রায় ১৬ লাখ টন। ধান ৩৭ হাজার টন এবং গম এক লাখ ৬৯ টন। এটা আমরা সাধারণত আশা করি ১০-১২ লাখ থাকা উচিত। কার্তিক-আশ্বিন মাসে প্রায় ১৮ লাখ টন খুবই ভালো মজুত বলে মনে করি। কাজেই এই নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে।
বিশ্বের মানুষ খাদ্য সংকট ও মন্দা নিয়ে উদ্বিগ্ন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই বছর ইংল্যান্ডের মতো দেশে ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা হয়েছে। পুড়ে গেছে পুরো গমের খেত। অন্যান্য ফসলের খেতও পুড়ে গেছে। আমেরিকার মতো দেশে খরা হয়েছে। এজন্য একটা আশঙ্কার কথা আসছে।বাংলাদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধের জন্য সারা পৃথিবীতে সমস্যা হলে আমরা তো আলাদা নই। আমরা তো গম বিদেশ থেকে আনি। সেজন্য সাধারণ নাগরিকদেরকেও আমরা সচেতন করছি। কার্পেটের নিচে ধুলো লুকিয়ে রেখে তো লাভ হবে না, তাতে দেশ আরও বিপর্যয়ের মধ্যে যাবে। কার্পেটের নিচে ধুলো রেখে দিলে, যখন বিপদ হবে তখন মোকাবিলা করা কঠিন হবে।সারের মজুতের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারের যে ঘাটতি আছে, আসলে এটা ঘাটতি নয়। আমাদের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। মূলত সার নিয়ে যেটা হয়েছে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত কিনেছে। তবে সারের মজুত যথেষ্ট। সার নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।সংবাদ সম্মেলনে তেলবীজের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বছরে ২৩-২৪ লাখ মেট্রিকটন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সরিষা, তিল, সানফ্লাওয়ারসহ অন্যান্য তেলবীজ থেকে তিন লাখ টন তেল উৎপাদন করি। আমরা মোট চাহিদার ১০ শতাংশ উৎপাদন করি।
আগামী তিন বছরে মধ্যে দেশে পাঁচটি প্রধান তেলবীজের উৎপাদন বাড়ানো হবে জানিয়ে সচিব বলেন, পরিকল্পনা নিয়েছি আগামী তিন বছরে মধ্যে সরিষা, তিল, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী ও সয়াবিন এগুলোর উৎপাদন বাড়াবো। এখন থেকে যদি আমরা পাঁচ লাখ হেক্টর জমি তেলবীজ জাতীয় ফসলের আওতায় আনতে পারি, তাহলে তেলের মোট চাহিদার ৪০-৫০ ভাগ আমাদের উৎপাদন থেকে মেটাতে পারবো। এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছি। তবে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উন্নত বীজ পাওয়া।