দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে দলটি আবারও নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেল এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ ফিরে পেল।
রবিবার (১ জুন) দেশের সর্বোচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি দেশি-বিদেশি নানা সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে।
তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সী সংবাদ শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করল সর্বোচ্চ আদালত’। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, এই রায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে এবং আগামী মাসগুলিতে নির্ধারিত দেশের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন তাদের সংবাদের শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীকে পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটি ওই আদেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করে এবং অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছবি যুক্ত করে সামা টিভি শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সংবাদ শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বৃহত্তম ইসলামী দলকে ফিরিয়ে এনেছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আমলে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল এবং এর নেতাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর জামায়াতের ফেরার পথ সুগম হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, নিষিদ্ধ জামায়াত-ই-ইসলামির দল নিবন্ধন পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। তারা বলছে, বাংলাদেশ রোববার বৃহত্তম ইসলামী দলটির নিবন্ধন পুনঃস্থাপন করেছে, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচনের বাইরে থাকা দলটির নির্বাচনে ফেরার সুযোগ তৈরি করেছে।
ডনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি আওয়ামী লীগকেও সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
১ জুন সেই মামলার শুনানি সরাসরি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সম্প্রচারিত হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা উসকানি, সহায়তা, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতাসহ কমপক্ষে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।