জানুয়ারি মাসের শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন আসছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রথম দফায় ৩ কোটি ডোজ আনা হবে। পরে মে-জুনের মধ্যে আরও ৬ কোটি ডোজ আসবে।
আজ সোমবার (২১ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় সচিব এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনলাইনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রীরা সচিবালয়ে বৈঠকে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানান, টিকা দিতে ইতোমধ্যে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। মূলত ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূাচ) এবং সরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে আলোচনা চলছে। সচিব বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভ্যাকসিন পেয়ে যাব। এজন্য গ্রাসরুট লেভেন পর্যন্ত সবাইকে ট্রেনিং দেয়া শুরু হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য যেসব জিনিস ব্যবহার করা হবে সেগুলো কীভাবে ডিসপোজাল করা হবে সেই ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে টিকা দেয়া যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা করছেন।’ তিনি বলেন, ‘ইপিআইয়ের (টিকা কার্যক্রম) যে ব্যাপক কার্যক্রম আছে, (করোনার টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে) সেটিকে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, প্রাইভেট সেক্টরকে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন।’ ‘যেহেতু সময় পাচ্ছি আমরা, আপাতত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যদি অন্য কেউ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাপ্রুভালসহ (অনুমোদন) প্রস্তাব নিয়ে আসে, সরকার কাউকেই মানা করবে না। আমাদের যে কমিটি আছে তারা অ্যাপ্রুভ করবে।’ তিনি বলেন, ‘উনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) বললেন, আরও ৬ কোটি ভ্যাকসিন কোভেক্সের মাধ্যমে মে-জুন মাসের মধ্যে আসবে। এক মাস আগে-পরে হতে পারে। প্রথম দফায় যে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসার কথা, তার মধ্যে দেড় কোটি ডোজ আসছে। দুটি ডোজ ভ্যাকসিন মিলে একটি টিকা হবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় আরও তিন কোটি মানুষের জন্য টিকা আসবে। ২০ শতাংশ মানুষকে এই টিকা দেয়া যাবে। সাড়ে চার কোটি মানুষকে টিকা দেয়া যাবে।’ মাইনাস ১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় করোনাভাইরাসের টিকা সংরক্ষণ হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গ্রাসরুট লেভেল পর্যন্ত গিয়ে টিকা দেয়ার স্ট্র্যাকচারই আমাদের নেই। একমাত্র কোল্ডস্টোরেজে রাখতে পারবেন, তারপর যখন বের করবে মাইনাস ১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা…টেকনিক্যাল কমিটি উনারা এটা দেখবে। উনারা যদি মনে করেন আমাদের যে স্ট্র্যাকচার আছে সেটাকে মেজর কোনো চেইঞ্জ না করে টিকা দেয়া যায় এবং হ্যাজার্ড হবে না, এটা টেকনিক্যাল বিষয়।’ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যা জানি, মর্ডানা এবং ফাইজার দু-টার টিকাই মাইনাস ২৫ ডিগ্রি এবং আরেকটা মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।’