বীমা খাত আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে বীমাগ্রাহকদের প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস’র (মুঠোফোনে খুদে বার্তা) মাধ্যমে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিফাইড মেসেজিং প্লাটফর্ম বা ইউএমপি’র উদ্যোগ নিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বীমা কোম্পানিগুলোকে নির্দেশও দিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
তবে ইউএমপি বাস্তবায়ন বা এসএমএস দেয়ার দায়িত্ব এক বেসরকরি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়া এবং এসএমএসের ব্যয় নির্ধারণ নিয়ে বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে আইডিআরএ’র উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা দেখা দিয়েছে। এমনকি হাইকোর্টের একজন আইনজীবী গ্রাহক হিসেবে আইডিআরএ’র নির্দেশনা স্থগিতেরও আবেদন করেছেন।
ইউএমপি বাস্তবায়নের বিষয়ে কোম্পানিগুলোতে পাঠানো আইডিআরএ’র নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইউএমপি’র মাধ্যমে প্রত্যেক বীমাগ্রাহককে এসএমএস’র মাধ্যমে লেনদেনের নোটিফিকেশন পাঠানো হবে। ফলে স্বচ্ছতা ও আস্থা অনেকাংশেই প্রতিষ্ঠিত হবে, যার মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি উপকৃত হবে। ইউএমপি বাস্তবায়নের কারণে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কোম্পানিগুলোকে পৃথকভাবে কোনো যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে না। ফলে খরচ কমে আসবে এবং তামাদি পলিসিও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।
ইউনিফাইড মেসেজিং প্লাটফর্ম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানিগুলোকে তাদের পলিসি ও পলিসিহোল্ডার সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য নির্ধারিত ফরমেটে ইউএমপি পোর্টালে আপলোড করতে বলা হয়েছে। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি বীমা কোম্পানির দুজন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেবে আইডিআরএ। একই সঙ্গে ইউএমপি’র সেবা সম্পর্কে বীমাগ্রাহকদের সচেতন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে বীমাকারীদের।
ইউএমপি বাস্তবায়নে বীমা কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রতিটি পলিসির বিপরীতে ত্রৈমাসিক ভিত্তিক তথা প্রতি তিন মাসে আট টাকা হারে খরচ করতে হবে। পে-অর্ডার অথবা পে-চেকের মাধ্যমে প্রথম মাসের এক তারিখের মধ্যে আইডিআরএ-কে জানিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ডিওইআর সার্ভিস লিমিটেড বরাবর এ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বীমা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে বেস কয়েকটি কোম্পানি বীমা পলিসির প্রিমিয়ারের বিপরীতে গ্রাহকদের এসএমএস সেবা দেয়া শুরু করেছে। এক্ষেত্রে এসএমএস’র জন্য কোম্পানির যে অর্থ খরচ হচ্ছে, আইডিআরএ তার থেকে কয়েকগুণ বেশি খরচ নির্ধারণ করেছে।
আইডিআরএ’র নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে এসএমএস’র জন্য প্রতি বছর বীমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিতভাবে অর্ধশত কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। পাশাপাশি বীমাগ্রাহকের তথ্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা অনিরাপদ এবং কোনোভাবেই আইনসঙ্গত নয়।