১৯৯৪ সালের আনসার বিদ্রোহের ঘটনার মামলায় খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে, তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনটি কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।আজ মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আনসার ভিডিপি মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও কামাল উল আলম।পরে রায়ের বিষয়ে ব্যারিস্টার অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলায় আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে রিট নিষ্পত্তি করেছেন। রায়টি প্রকাশিত হলে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো যে, রিটকারী আনসার সদস্যদের আপিল বিভাগ কী কী সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন।এর আগে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যা পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহে রূপ নেয়। সেনাবাহিনী, বিডিআর ও পুলিশের সহযোগিতায় একই বছরের ৪ ডিসেম্বর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরে ওই বিদ্রোহের ঘটনায় ২ হাজার ৬৯৬ জন ভিডিপি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। একই সঙ্গে ২ হাজার ৪৯৬ জন আনসারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।এদিকে বিদ্রোহের ঘটনায় পৃথক সাতটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ১৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা বিচারে খালাস পান। পরে তারা চাকরি ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু তাদের চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।
তাই পরবর্তী সময়ে তারা চাকরিতে পুনর্বহাল ও প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সেসব রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল ২৮৯ জন, ১০ জুলাই ১৪৪৭ জন এবং ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ৬৭৪ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দেন হাইকোর্ট।রায়ের পর আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর সংঘটিত আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে যাদের শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে তারাই চাকরি ফেরত পাবেন। কিন্তু যাদের সক্ষমতা নেই তারা যতদিন চাকরিতে ছিলেন তাদের ততদিনের পেনশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলেন আদালত।পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক আপিল বিভাগে আপিল করেন।